পায়ের ছাপ দেখা গেলেও এখনও খোঁজ নেই বাঘের। রবিবার থেকেই পাথরপ্রতিমার শ্রীধরনগর অঞ্চলের উপেন্দ্রনগর এলাকায় এই নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার পর্যন্ত বাঘের দেখা পাওয়া যায়নি। বাঘকে ধরতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে বনদপ্তর। ঠাকুরান নদী তীরবর্তী জঙ্গলের লোকালয়ের দিকে প্রায় ৮ কিমি নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। এমনকী ছাগলের টোপ দিয়ে একটি খাঁচাও পাতা হয়। বাঘের দেখা পেতে ওড়ানো হয় ড্রোনও। কিন্তু কোনওভাবেই বাঘের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এর ফলে রাতে পালা করে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।
রবিবার স্থানীয় ঠাকুরান নদীর তটে প্রথম বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান মৎস্যজীবীরা। এরপর থেকে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর দেওয়া হয় বনদপ্তরকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন পাথরপ্রতিমা থানার পুলিশ–সহ রামগঙ্গা রেঞ্জ ও নলগড়া বিট অফিসের বনকর্মীরা৷ পায়ের ছাপ ধরে বাঘের গতিবিধির উপরে নজরদারি শুরু করা হয়। ছাগলের টোপ দিয়ে খাঁচা পাতে বনদপ্তর। বাঘের খোঁজ পেতে ড্রোনও ওড়ানো হয়। কিন্তু তাতেও ধরা পড়েনি বাঘের ছবি। এর আগেও সুন্দরবনের লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। শীতকালে এই ধরনের ঘটনা আরও বেশি করে ঘটে।
বনদপ্তরে এডিএফও (অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ফরেস্ট অফিসার) পার্থ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, একটি বাঘ স্থানীয় জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে বাঘটি। বাঘটিকে ধরতে ৬০ জনের একটি ‘কুইক রেসপন্স টিম’ কাজ করেছে। কিন্তু বাঘটি দ্রুত অবস্থান পরিবর্তন করছে। তাই তাঁকে ধরতে একটু সমস্যা হচ্ছে। বাঘটিকে ধরার জন্য ছাগলের টোপ দিয়ে একটি খাঁচা পাতা হয়েছে। বাঘ খাঁচাবন্দি না হলে উল্টোদিকের জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা করা হবে। এর জন্য ফাটানো হচ্ছে পটকা।
গ্রামবাসীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পুলিশ ও বনকর্মীরাও রোজ রাতে এলাকায় পাহারা দিচ্ছেন। গ্রামবাসীদের দাবি, বাঘটি নদী পেরিয়ে লোকালয়ের একটি ছোটো জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে। সেখান থেকে বাঘের গর্জন শোনা গিয়েছে। খবর পেয়ে এলাকায় এসেছেন পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা। কথা বলেছেন এডিএফও পার্থ মুখোপাধ্যায়–সহ বন আধিকারিকদের সঙ্গে। গ্রামবাসীদের আতঙ্ক কাটাতে তিনি নাইলনের জালগুলি স্থায়ীভাবে লাগিয়ে রাখার জন্য বনদপ্তরকে আবেদন জানিয়েছেন।
Advertisement