পুজোর আগে টয়ট্রেনের তিনটি নতুন রুট চালু করতে চলেছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে। সুকনা থেকে রংটং, কার্শিয়াং থেকে মহানদী ও কার্শিয়াং থেকে টুং নতুন এই তিন রুটে টয়ট্রেন পরিষেবা হবে বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার, টয়ট্রেনের ১৪৪তম জন্মদিনে এই ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, অনেকেই সময়ের অভাবে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং দীর্ঘ পথ যেতে চান না। এই সংক্ষিপ্ত রুটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আবার অনেকের টয়ট্রেন চড়ার ইচ্ছা হলেও পাহাড়ে যেতে পারেন না। সেজন্য সুকনা থেকে রংটং টয়ট্রেন চালানো হবে। যেহেতু পুজোর সময় পর্যটকদের ঢল নামে, তাই এই পরিষেবাগুলি তাদের মন জয় করবে বলে আশাবাদী ডিএইচআর।
প্রসঙ্গত, ১৮৮১ সালের ৪ জুলাই পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে কু ঝিক ঝিক করে রওনা দেয় টয়ট্রেন। পাহাড়ের নিস্তব্ধতা ভেঙে শ্বেতশুভ্র মেঘে ঢাকা আকাশের নিচে পাইনের মনোরম জঙ্গল দিয়ে যায় এই টয়ট্রেন। শুরুতে এই ঐতিহাসিক টয়ট্রেন শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন থেকে দার্জিলিংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। প্রায় দেড় শতবর্ষের সেই ঐতিহ্যকে স্মরণে রাখতে নর্থবেঙ্গল পেন্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ও দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের যৌথ উদ্যোগে এই প্রথমবার সুকনায় ‘টয়ট্রেন দিবস’ উদযাপিত হয়। শিলিগুড়ির সুকনা স্টেশনে দিনভর নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালিত হয় এই ঐতিহাসিক দিনটি। চিত্র প্রদর্শনী ও বসে আঁকো প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সকাল থেকেই স্টেশন চত্বর জমজমাট হয়ে ওঠে। এই অনুষ্ঠানে প্রায় শতাধিক ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করে। বাড়তি পাওনা হিসেবে তাদের চড়ানো হয় টয়ট্রেনে। শিশুদের সঙ্গে সঙ্গে শতাধিক চিত্রশিল্পীও দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের গৌরবগাথা তাঁদের রং-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলেন।
এক ঐতিহ্যবাহী টয়ট্রেন এদিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ ছিল। সেখানে দর্শনার্থীরা ফটো সেশন ও সংক্ষিপ্ত সফরের মাধ্যমে ট্রেন যাত্রার আনন্দ উপভোগ করেন। প্রতি বছরই এই দিনটি আরও বড় পরিসরে উদযাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। উপস্থিত অতিথিরা টয় ট্রেনের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর চন্দনকুমার রায়, স্টেশন ম্যানেজার ও নর্থবেঙ্গল পেন্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। চন্দন কুমার রায় বলেন, ‘টয়ট্রেনকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তাই আমরা নানা পদক্ষেপ নিচ্ছি।’