আচমকাই রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী তথা প্রবীণ তৃণমূল নেতা দীনেশ ত্রিবেদী। বলেছিলেন, তার দম বন্ধ হয়ে আসছিল। অন্তরাত্মার ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল, গুজরাটি এই ব্যবসায়ীর পরবর্তী গন্তব্য কী? জবাবে দীনেশ বলেছিলেন, অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদি আমার দীর্ঘ দিনের বন্ধু। বিজেপি’র দরজা আমার জন্য অনেক দিন ধরেই খােলা। শনিবার সেই দীনেশ যােগ দিয়েছেন বিজেপি’তে।
এদিন দিল্লিতে বিজেপি’র সদর দফতরে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডার হাত থেকে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রাথমিক সদস্যপদ নেন তিনি। নাড্ডা বলেন, এতদিনে সঠিক মানুষ সঠিক দলে এলেন। আগামীকাল ব্রিগেডে নরেন্দ্র মােদির সমাবেশ রয়েছে। রবিবার ব্রিগেডে দীনেশও বক্তৃতা দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আরও একটি ঘটনার সাক্ষী থাকতে পারে ব্রিগেড।
তা হল প্রাক্তন দুই রেলমন্ত্রী ব্রিগেড সমাবেশে বক্তৃতা করবেন। এক মুকুল রায় ও দুই, দীনেশ ত্রিবেদী। অনেকের মতে, রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দীনেশ। তার মধ্যে অন্যতম ছিল কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারের অযথা সংঘাতে জড়ানাে।
দীনেশ অভিযােগ করেছিলেন, অকারণে ঝগড়া করে রাজ্যে উন্নয়নের কাজ স্তব্ধ করে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে রাজ্যবাসীদের। কাল হয়তাে সেগুলিও হাটের মাঝে বলবেন।
প্রায় জন্মলগ্ন থেকে দিদির সঙ্গে থাকা এই রাজনীতিবিদ। গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর দীনেশ আরও বলেছিলেন, যারা রাজনীতির অ আ ক খ জানেন না, তারাই এখন নেতা হয়েছেন। অনেকের মতে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের প্রতি আক্রমণ শানাতে গিয়েই এ কথা বলেছিলেন তিনি।
তারপর নাম না করে দীনেশের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, এখন বলছে দম বন্ধ হয়ে আসছে। তারপর গিয়ে বিজেপির ভেন্টিলেটরে ঢুকে পড়বেন।
২০০৯ সালে বারাকপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা তড়িত্বরণ তােপদারকে হারিয়ে সংসদে যান দীনেশ। ২০১৪ সালে বারাকপুর কেন্দ্রে সিপিআই (এম) প্রার্থী করেছিল স্বাধীনতা সংগ্রামী লক্ষ্মী সায়গলের মেয়ে সুহাসিনী আলিকে। তাকেও হারিয়ে দেন দীনেশ ত্রিবেদী। কিন্তু উনিশের ভােটে বিজেপি’র অর্জুন সিংয়ের কাছে হারতে হয় তাকে। তারপর দিদি তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিলেন।