তৃণমূলে একটাই গোষ্ঠী, দ্বন্দ্ব নেই : মমতা

সােমবার কোচবিহার নেতাজি ইন্ডাের স্টেডিয়ামে জেলা তৃণমূলের ডাকে এই কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দেন কোনও রকম গােষ্ঠীদ্বন্দ্ব তিনি মেনে নেবেন না।

Written by Subhash Mandal Cooch Behar | November 19, 2019 3:38 pm

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

লােকসভা ভােটে কোচবিহারের দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ের পর প্রথম কোচবিহারে নেতাজি ইন্ডাের স্টেডিয়ামের কর্মিসভায় কর্মীদের গােষ্ঠীকোন্দল ভুলে গিয়ে কাজ করার পাশাপাশি গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশে তােপ দাগলেন তৃণমূল নেত্রী। পাশাপাশি নেতা-কর্মীদের কার্যত গােষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সংযত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সােমবার কোচবিহার নেতাজি ইন্ডাের স্টেডিয়ামে জেলা তৃণমূলের ডাকে এই কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দেন কোনও রকম গােষ্ঠীদ্বন্দ্ব তিনি মেনে নেবেন না। তিনি বলেন, তৃণমূলে কোনও গােষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। তৃণমূলে একটি গােষ্ঠী, জোড়া ফুল। সভার শুরুতেই রবীন্দ্রনাথ ঘােষের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ওর আটারিটা সম্পূর্ণ ব্লক ছিল। কলকাতায় না গেলে সমস্যা হত। এসএসকেএম হাসপাতালে সােমবার রবিবার এনজিওপ্লাস্ট হয়েছে। ও এখন সুস্থ আছে। কর্মীদের সামনে তিনি রবিবার সুস্থতার কথা তুলে ধরতেই সকলেই হাততালি দেন। রবি অনেকদিন ধরে তার সঙ্গে কাজ করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এদিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, কোচবিহার জেলা সভাপতি মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, বিধায়ক উদয়ন গুহ, মিহির গােস্বামী, জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল আহমেদ, কোচবিহার পুরসভার পুরপ্রধান ভূষণ সিং, জেলা পরিষদ সদস্য সুচিস্মিতা দেবশর্মা প্রমুখ।

ইন্ডাের স্টেডিয়ামে এদিনের কর্মিসভায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে তােপ দেগে বলেন, ‘ভােটে জেতার জন্য টাকা ছড়াচ্ছে বিজেপি। লােকসভা ভােটের আগে রাতের অন্ধকারে টাকা বিলিয়ে আর কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে অপারেশন চালিয়েছে। কোচবিহারে সেই বিজেপি’র গুণ্ডারা আসছে হায়দরাবাদ থেকে’। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে রাজ্য সরকার উন্নয়ন করলেও অপপ্রচার চালাচ্ছে বিজেপি।

এদিন বিকেল ৩টে ৫৫ মিনিটে কোচবিহারে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখান থেকেই তিনি জানালেন, মুর্শিদাবাদ এবং মালদা যাবেন। পাশাপাশি বাম-কংগ্রেসকেও তীব্র কটাক্ষ করেন তিনি। ছিটমহলের পাশাপাশি এনআরসি’র প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘আমি মনে করি না হেরেছি। বিজেপি এখানে গুণ্ডামি করে জিতেছে।

তিনি বলেন, অপপ্রচারের কাছে অনেকেই মাথা বিকিয়ে দিয়েছেন। অপপ্রচার আর কুৎসা অর্থবল বেশি বলে কাছে কেউ কেউ ভাবতে পারিনি রাতের অন্ধকারে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে কিভাবে অপারেশন করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের নানা উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মাত্র আট বছরে ৪৩টা মাল্টি সুপার হাসপাতাল গড়ে উঠেছে এরাজ্যে। কোচবিহারে মেডিকেল কলেজ হয়েছে, পঞ্চানন বর্মা ইউনিভার্সিটি হয়েছে। কোথাও তাে কোনও কিছু কাজের বাকি নেই।

তিনি বলেন, যার কাজ করার আমি করব। আমি শুধু কাজিনা ভবিষ্যৎ করে দিয়ে যাব বাংলার মানুষের। কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন আজকের কর্মিসভা থেকে শপথ নিতে হবে কিছুতেই এরাজ্যে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমকে ক্ষমতায় আসতে দেব না। দলের জন্য নির্ভীকভাবে কাজ করতে হবে কর্মীদের সকলকে।

তৃণমূল নেত্রী নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন সমাজের বুদ্ধিজীবী মানুষের শিল্পী থেকে শুরু করে সকলের বাড়িতে গিয়ে কথা বলতে হবে। চায়ের দোকানে গিয়ে আড্ডা মারতে হবে খাটিয়া কালচারের মধ্য দিয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিজেপি’র কড়া সমালােচনা করে বলেন, এখানকার মানুষ গুণ্ডামি বরদাস্ত করবে না। তিন দলকেই বাংলা থেকে মানুষ বিদায় করবে। এনআরসি নিয়ে বিজেপি’কে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেন। এদিনের এই কর্মিসভায় রবীন্দ্রনাথ ঘােষের পাশাপাশি মিহির গােস্বামী, আব্দুল জলিল আহমেদ প্রমুখদের কথাও তুলে ধরেন।