• facebook
  • twitter
Monday, 15 December, 2025

স্বাস্থ্যে রাজ্যে বিপ্লব হয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

১১০০ শয্যার হাসপাতালের শিলান্যাস

নিজস্ব চিত্র

বর্তমান সরকারের জমানায় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি দেখেছে বাংলা। তৈরি হয়েছে একের পর এক সুপার স্পেশ্যালিটি, মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। নতুন ১৪টি মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে হয়েছে বিপুল বরাদ্দ। এই আবহে ফের এক মাইলফলক ছুঁতে চলেছে বাংলা। বৃহস্পতিবার কলকাতায় গরিব মানুষের জন্য দেশের অন্যতম বড় মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিউটাউন কনভেনশন সেন্টারের বিপরীতে হাসপাতালে শিলান্যাস অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন নারায়ণা গ্রুপের চেয়ারম্যান দেবী শেঠি, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম সহ অন্যরা। নারায়ণা গ্রুপের উদ্যোগেই নিউটাউনে হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে।

মমতা জানিয়েছেন, এই হাসপাতালের কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এই হাসপাতালে ক্যান্সারের চিকিৎসার পাশাপাশি হার্ট অপারেশনেরও ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও থাকবে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এবং অর্গ্যান ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইউনিট। এ দিনের এই মঞ্চ থেকে মমতা জানান, রাজ্যে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিপ্লব এসেছে। পাশাপাশি তাঁর কথায় উঠে এল ধর্ম–প্রসঙ্গ। সকলকে সঙ্গে নিয়ে চললে কীভাবে কাজে সফলতা পাওয়া যায় তারই একটি উদাহরণ দিয়ে তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

গরিব মানুষের জন্য এই হাসপাতাল তৈরির উদ্যোগ নেওয়ায় এ দিন দেবী শেঠিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা। দেশের অন্যতম নামকরা চিকিৎসক দেবী শেঠি বলেছিলেন, ‘বেঙ্গল মিনস বিজনেস’। এই মন্তব্যের জন্য মঞ্চ থেকে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি যাঁরা বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনকে নিয়ে কুৎসা করেছেন তাঁদের আক্রমণ করেছেন তিনি। দেবী শেঠির কথাকে হাতিয়ার করে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন বাংলাকে নিয়ে কুৎসা করার কোনও জায়গা নেই। বাংলাকে নিয়ে যাঁরা কুৎসা করেন তাঁদের ‘নেগেটিভ’ মানুষ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন মমতা। তাঁর দাবি, বিশ্ব বাণিজ্য বঙ্গ সম্মেলন বা বিজিবিএস এই সব নেগেটিভ মানুষগুলোর চোখ খুলে দিয়েছে।

Advertisement

মমতা জানান, দেবী শেঠি নিজে বাংলায় একটি বড় হাসপাতাল নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। গতবারের বিজিবিএস চলাকালীন নারায়ণা গ্রুপ ও রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছিল। মাত্র ৩ মাসের মধ্যে হাসপাতাল তৈরির জন্য নারায়ণা গ্রুপকে ৭.২৬ একর জমি দেয় হিডকো। ২০২৫ সালের বিজিবিএস চলাকালীন দেবী শেঠি মমতাকে হাসপাতালের শিলান্যাস করার জন্য অনুরোধ জানান। সেই অনুরোধ রেখে মাত্র ১৩–১৪ দিনের মধ্যে হাসপাতালের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, এই হাসপাতালে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। দুটি দফায় হাসপাতালের শিলান্যাস হবে। প্রথম দফায় ৫০০ এবং দ্বিতীয় দফায় ৬০০ শয্যা হবে।

অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে হাসপাতালের লোকেশনের প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরকম প্রাইম লোকেশনে হাসপাতালটি তৈরি হওয়ায় মানুষের সুবিধা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন মমতা। তিনি জানান, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে ওষুধপত্র। এসবের পিছনে খরচ হয় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। রাজ্যে ১৪টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে। ৪২টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল রয়েছে।

মমতার দাবি, আগে জেলায় ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট থাকত না। আগে ৬টি এসএনসিইউ ছিল। সেই সংখ্যাটা এখন দাঁড়িয়েছে ৭১–এ। ১৩ হাজার ৩৯২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হয়েছে। আগামী বছরে আরও ১২ হাজার সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হবে। ১১৭টি ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান খোলা হয়েছে। ১৭৮টি ন্যায্যমূল্যের ডায়াগনস্টিক সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ৯ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা পান। পরিবারের মহিলা সদস্যের নামে দেওয়া হয় স্বাস্থ্যসাথী। এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে কোনও মানদণ্ড লাগবে না। সকলেই এই সুবিধা পান বলে জানান মমতা। এখানেই অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে বাংলার ফারাক। স্বাস্থ্যসাথীতে ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ‘শিশুসাথী’ প্রকল্পে ৩২ হাজার শিশুর অপারেশন হয়েছে।

Advertisement