পরিজনদের নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন শান্তিনিকেতনের শ্রীলঙ্কান পরিবার

ভারতের পড়শি এবং বন্ধু দীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি উত্তপ্ত। স্ত্রীকে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শ্রীলঙ্কার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।

Written by খায়রুল আনাম Shantiniketan | July 15, 2022 11:36 am

ভারতের পড়শি এবং বন্ধু দীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। কোনক্রমে স্ত্রীকে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শ্রীলঙ্কার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।

প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে গোটা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না।

দেশ ছাড়ার আগে তাঁকে দেশের অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের পদ সামলাবার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে বিক্ষোভ থামিয়ে দেশে শান্তি ফেরাতে পুলিশ ও সেনাকে যথেচ্ছ ক্ষমতা ব্যবহারের নির্দেশও দিয়েছেন রনিল বিক্রমসিংহে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রধান জেনারেল শভেন্দ্র সিলভা স্পষ্টভাবে জানিয়েও দিয়েছেন, সংবিধানের মর্যাদা রেখে কাজ করবে পুলিশ ও সেনা বাহিনী।

যদিও তাতেও মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত করা যাচ্ছে না। গোতাবায়া রাজাপক্ষের দফতর, বাসভবনের দখল নিয়ে দাপাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।

লিবেরেশন তামিল টাইগার ইলম বা এলটিটিই নেতা প্রভাকরণের সময়কালে জাফনা দখলের পরেও দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় এহেন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি।

এক সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষা ভাবনার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বিশ্বভারতীর সঙ্গীতভবনে কথাকলি নৃত্য নিয়ে অধ্যায়ন করতে শান্তিনিকেতনে আসেন শ্রীলঙ্কার মেয়ে চাঁদনি কস্তুরি আরচি। তাঁর জন্ম শ্রীলঙ্কার কালুতারা জেলার হরানা শহরে।

সঙ্গীতভবনে পড়াশোনার পাঠ শেষ করে চাঁদনি কস্তুরি আরচি বিয়ে করেন সঙ্গীতভবনেরই অধ্যাপক প্রেমজিৎ সিংহকে।

তারপর থেকেই তিনি শান্তিনিকেতনের এভুজ পল্লিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

২০১৭ সালে তিনি শেষবার শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলেন। তাঁর ছেলে লাহিরু সাতসরের জন্ম হয় শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে।

তিনি শেষবার শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলেন ২০১৯ সালে। শ্রীলঙ্কাতে রয়েছেন চাঁদনি কস্তুরি আরচির দাদা, দিদিরা ছাড়াও পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও আত্মীয়রা।

শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে শান্তিনিকেতনে বসে নিয়মিত মোবইল ফোনে তাঁদের খোঁজ-খবর পাচ্ছেন চাঁদনি কস্তুরি আরচি।

কিন্তু সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন সব সময়। সেখানকার বহু মানুষের কাছে অর্থ থাকলেও তাঁরা নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে পারছেন না।

খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানির মূল্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। জ্বালানি তেল না মেলার জন্য পরিবহন ব্যবস্থা প্রায় স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারছেন না।

রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে গোতাবায়া রাজাপক্ষের ভুল সিদ্ধান্তের জন্যই আজ শ্রীলঙ্কাকে এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে বলে সেখান থেকে প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার দূরে বসবাস করেও উপলব্ধি করছেন চাঁদনি কস্তুরি আরচি।