আইনসভায় পাশ করা কোনও বিল রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি কেউই অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখতে পারেন না। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশকে হাতিয়ার করে এবার সংবিধান সংশোধনী বিল আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। আসন্ন বিধানসভা অধিবেশনে সেই প্রস্তাব আসতে চলেছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, অতি গুরুত্বপূর্ণ একাধিক বিল এখনও আটকে রয়েছে রাজভবনে। রাজভবনের চূড়ান্ত অসহযোগিতায় রাজ্যের সংস্কারমুখী কাজগুলি আটকে রয়েছে। আর সেই মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ শীর্ষ আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি কেউই অনির্দিষ্টকালের জন্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল আটকে রাখতে পারেন না। সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে যে বিলগুলি রাজ্যপালের কাছে পড়ে রয়েছে, সেই বিলগুলিতে অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে রিকুইজেশন আসতে পারে। এর প্রেক্ষিতে সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব আসতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিষয়টি প্রস্তাব আকারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
বিধানসভায় পাশ হওয়া ১৮টি বিল আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। সমস্যা হল, সাধারণত সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতিকে এ ব্যাপারে ‘নির্দেশ’ দিতে পারে না। কিন্তু সংবিধানের ১৪২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, শীর্ষ আদালত ‘সুবিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে’ আইনত এই বিশেষ রায় দিতে পারে। আর এই নির্দেশ কার্যকর করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতেই হবে। এই প্রস্তাবই এবার আনা হতে পারে বাংলার বিধানসভা অধিবেশনে। যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, আইনসভায় পাশ করা কোনও বিল রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি কেউই অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখতে পারেন না, সেহেতু বিলে স্বাক্ষর করে আইনে পরিণত করার জন্য সংবিধান সংশোধনী আনতে পারে রাজ্য।
উল্লেখ্য, আগামী ৯ জুন থেকে দুই সপ্তাহের জন্য শুরু হচ্ছে বিধানসভার অধিবেশন। সেই অধিবেশনেই আসতে চলেছে সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব। এ প্রসঙ্গে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের জাজমেন্টের পরিপ্রেক্ষিতে যে বিলগুলি রাজ্যপালের কাছে পড়ে রয়েছে সেই বিলগুলিতে অনুমোদন দেওয়ার বিষয় বিকুইজেশন আসতে পারে যে, সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব আনা হতে পারে। সেটি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হবে। সেই বিলে স্বাক্ষর করে আইনে পরিণত করার জন্য একটা সময়সীমা বেঁধে দিতে গেলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।