• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

সফল হতে গেলে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে: সৌরভ

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির 'উৎসাহ দান' সভায় কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ দিতে হাজির হয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক।

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির ‘উৎসাহ দান’ সভায় কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ দিতে হাজির হয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী। নিজের স্কুলের সময়, নিজের মেয়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের মা-বাবাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, ছেলে মেয়েকে বাড়িতে বসিয়ে রেখে, নামি কোনও ব্যক্তিত্ব হিসাবে পরিচয় গড়ে তোলা সম্ভব নয়। ছেলে মেয়েকে তাদের জীবন গড়ে তোলার জন্য বাইরে যেতে দিতে হবে। শুধু তাই নয়, তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে যেকোনো কাজে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার উপদেশ দিয়েছেন। সৌরভের মতে, জীবনে সাফল্য অর্জনের জন্য চেষ্টার বিকল্প হয় না। শুক্রবার রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হল ‘উৎসাহদান’ সভা।

এই সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী, অজয় মুকুন্দ রানাডে (এডিজি হোমগার্ড) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ও কলকাতা পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির কো-অর্ডিনেটর শান্তনু সিনহা বিশ্বাস, পশ্চিমবঙ্গ ওয়েলফেয়ার কমিটির কনভেনার বিজিতাশ্ব রাউত, কলকাতা পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির কনভেনার রহুল আমিন আলি শা সহ কমিটির একাধিক কর্তা ব্যক্তিরা। এদিন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, আইসিএসসি, সিবিএসসি, মাদ্রাসা বোর্ড থেকে পরীক্ষা দিয়ে খুব ভালো ফল করেছে, পুলিশ পরিবারের এমন কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের ৪৪০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এমনকি পুলিশ কর্মী এবং সহকারি পুলিশকর্মীর সন্তান হিসাবে যারা পশ্চিমবাংলার মধ্যে খুব ভালো রেজাল্ট করেছে তাদের মধ্যে থেকে আট জনকে বেছে নিয়ে ল্যাপটপ দেওয়া হয়।

Advertisement

সভা মঞ্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির কনভেনার বিজিতাশ্ব রাউত জানান, ‘আমারা যারা পুলিশে চাকরি করি তাদের সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে পরিবারের অবদান অনস্বীকার্য। আমাদের পরিবারে সন্তান মানুষের ক্ষেত্রে মায়ের ভূমিকায় বড় হয়ে দাঁড়ায়। যাদের বাবা বা মা পুলিশে চাকরি করেন তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেক সময় তারা সন্তানকে অনেক কম সময় দিতে পারেন। তারপরেও দেখা যায় তাদের সন্তানেরা পড়াশুনায় কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করছে। মূলত সেই সমস্ত কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ দান করতেই এই সভার আয়োজন করা হয়েছে। যাতে পুলিশ কর্মীদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আরও বেশি পড়াশুনায় উৎসাহিত হয়।’

Advertisement

এই সভায় উপস্থিত হয়ে সৌরভ গাঙ্গুলি পুলিশ কর্মী ও সহকারী পুলিশ কর্মীদের কৃতি সন্তানদের হাতে মেডেল এবং পুস্তক তুলে দেন। এবং তাদের উৎসাহিত করার জন্য বলেন, ‘আমি আগেও ২০২৩ সালে ব্যারাকপুরে এই ধরনের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। তখনও আমার খুব ভালো লেগেছিল এখনো এখানে এসে আমার খুব ভালো লাগছে। কারণ যারা ক্লাস ১০, ১২- তে পড়ে, তারা বাংলা আর দেশের ভবিষ্যৎ। আমি সেন্টজেভিয়ার্স থেকে পাশ করেছি। তখন এই সমস্ত কিছুর সম্মুখীন হয়েছি।’ সভা মঞ্চ থেকে সৌরভ কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের বাবা-মায়ের কাছে আবেদন করেন, ‘ছেলে মেয়েকে বাড়ি থেকে বের হতে দিতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের বাবা-মাকে বলি ছেলে মেয়েকে বাড়িতে বসে নাম করাতে পারবেন না। আমরা জানি, আমরা খুব সংরক্ষণশীল। আমার মেয়ে সানা ২২ বছর বয়সে পড়াশোনা করছে বাইরে। ছেলে-মেয়েকে বাইরে ছাড়তে হবে। ছেড়ে দিতে হবে। চাইলে সে তৈরি হয়ে বাড়ি ফিরবে অথবা তৈরি না হয়ে বাড়ি ফিরবে। বাড়িতে বসে থাকলে তাকে তৈরি করতে পারবেন না।’

এই সভা থেকে সৌরভ ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহিত করতে আরও বলেন, ‘তোমরা আরও অনেক বড় হবে, অনেক দুনিয়া দেখবে, সবার জীবনে ‘রিজেকশন’ আসবে। তবে আগে যে ‘বাতিল’ বলে গণ্য হয়েছে, তার জীবনে পরে সাফল্য এসেছে। তবে পড়াশোনা হোক, খেলাধুলা হোক, কর্মক্ষেত্র হোক বা ব্যবসা হোক সব ক্ষেত্রেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না সেই জিনিসটা পূর্ণ হবে।’ এই সভায় পুলিশ কর্মী ও সহকারী পুলিশ কর্মীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

Advertisement