• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

সিরিঞ্জের মাধ্যমে শরীরে কিছু একটা ঢুকেছিল, ঝাড়গ্রামে চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নতুন তথ্য

চিকিৎসক দীপ্র ভট্টাচার্যের মেসেজ পেয়ে তাঁর সহকর্মীরা তৎপর হয়ে ওঠেন। তাঁর ঘরে গিয়ে ডাকাডাকি শুরু হয়। কিন্তু তাঁর কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপরই দরজা ভেঙে লজের অন্যান্য আবাসিকরা দেখেন দীপ্রর নিথর দেহ পড়ে আছে।

ডাক্তার দীপ্র ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র

আরজি কর আবহে ফের এক চিকিৎসকের মৃত্যুতে রহস্য দানা বাঁধছে। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামে একটি লজের ঘর থেকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র রেসিডেন্ট দীপ্র ভট্টাচার্যের দেহ উদ্ধার করা হয়। সম্প্রতি সামনে এসেছে তাঁর ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট।
এই রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসকের শরীরে কিছু একটা ইনজেক্ট করা হয়েছে।  রিপোর্টে বলা হয়েছে, সিরিঞ্জ মারফত শরীরে কিছু ঢুকেছিল। তারপরই মাল্টি অর্গান ফেলিওর হয়। এর জেরেই মৃত্যু হয়েছে। যদিও চিকিৎসকের শরীরের বাইরে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুলিশ একটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে তা খতিয়ে দেখছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ১৩ মিনিট নাগাদ তিনি হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিস্ট চিকিৎসকদের গ্রুপে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন। তাঁর সেই মেসেজে উঠে আসে আরজি কর প্রসঙ্গও। তিনি সেই পোস্টে লিখেছিলেন, বছর দেড়েক আগেও তিনি আরজি করে  ছিলেন। আরজি করের চিকিৎসক-অধ্যাপকদের একাংশের বিরুদ্ধে থ্রেট কালচারে মদত দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি। চাকরি বাঁচাতে ওই চিকিৎসক-অধ্যাপকরা দুর্নীতিতেও মদত দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন দীপ্র। তিনি আরও লেখেন, ‘যদি আন্দোলনরত ডাক্তারদের ফেল করিয়ে দেওয়া হয় বা কেউ থ্রেট দেয়, তাহলে সেই ব্যক্তিকে আমার আত্মা তাড়া করে বেড়াবে, ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে।’ এই মেসেজ অনেকগুলি নম্বরে ফরোয়ার্ড করা হয়েছে বলে দাবি করেন ডাক্তারদের একাংশ। এই মেসেজটি করার পাশাপাশি তিনি তাঁর স্ত্রীকেও মেসেজ পাঠান। সেই মেসেজে স্ত্রীকে মুভ অন করে যাওয়ার পরামর্শ দেন দীপ্র। সেই মেসেজে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারিনি। পুরনো ক্ষত থেকে বেরোতে পারলাম না। আমি ফাঁদে পড়ে গিয়েছিলাম। বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলাম। তুমি মুভ অন করে যাও। তুমি কাঁদবে না, নতুন করে জীবন শুরু করো।’
চিকিৎসক দীপ্র ভট্টাচার্যের মেসেজ পেয়ে তাঁর সহকর্মীরা তৎপর হয়ে ওঠেন। তাঁর ঘরে গিয়ে ডাকাডাকি শুরু হয়। কিন্তু তাঁর কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপরই দরজা ভেঙে লজের অন্যান্য আবাসিকরা দেখেন দীপ্রর নিথর দেহ পড়ে আছে।  ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন, দীপ্র ভট্টাচার্য ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন, ওষুধও খেতেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান মানসিক অবসাদেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই চিকিৎসক। তাঁর শরীরে কী ইনজেক্ট করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

Advertisement