• facebook
  • twitter
Thursday, 12 June, 2025

এআই ডেটা সেন্টার তৈরিতে নিঃশব্দ বিপ্লব বাংলায়, শহরে আরও পাঁচ বিল্ডিং

জিও-র ৪০ একর মেগা ক্যাম্পাস তৈরির কাজ চলছে বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালিতে। সেটি বিশ্বমানের এআই দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ডেটা সেন্টার হিসেবে গড়ে উঠতে চলেছে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

এআই ডেটা সেন্টার তৈরিতে খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে রাজ্য। শুধুমাত্র চলতি বছরেই প্রায় গোটা পাঁচেক এআই ডেটা সেন্টার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেগুলির সবই কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায়। এছাড়া নিউটাউন এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় আরও গোটা পাঁচেক ডেটা সেন্টারের বিল্ডিং তৈরির কাজ চলছে। কলকাতায় বেশিরভাগ ডেটা সেন্টার হতে চলেছে নিউটাউনের সিলিকন ভ্যালিতে। নিঃশব্দে এই ডেটা সেন্টারগুলি তৈরির কাজ চলছে। কোনোরকম প্রচারও করা হয়নি। কেবলমাত্র উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে ওয়েবেল আইটি পার্কে এমন একটি ডেটা সেন্টারের সূচনা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে।

প্রসঙ্গত তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলা যে সফলতার মুখ দেখছে, তার জ্বলন্ত প্রমাণ মূলত গেমিং অ্যাপ ডিজাইনে বিখ্যাত ওয়েবস্কিটার্সের উদাহরণ। ওয়েবস্কিটার্স টেকনোলজি সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থা আট বছর আগে যখন কাজ শুরু করেছিল, তখন কর্মী সংখ্যা মেরেকেটে ৩০-এর কিছু বেশি ছিল। এখন সেখানে কর্মী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০০। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় অনেকগুলো ডেটা জমা হওয়ার যে প্রক্রিয়া, তাকে মোটামুটিভাবে ডেটা সেন্টার বলে। বস্তুত এটি একটি নির্দিষ্ট বিল্ডিং, যেখানে সার্ভার ও ইন্টারনেট কানেকশনের মাধ্যমে ডাটা সংরক্ষণ ও পরিচালনা করা হয়। একাধিক সার্ভার নেটওয়ার্ক দ্বারা সংযুক্ত করা হয়ে থাকে। বিল্ডিং তৈরিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব যাতে কম পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়। বিদ্যুতের উপরও ডেটা সেন্টার বিশেষভাবে নির্ভরশীল।

তবে রাজ্যে বিদ্যুতের উন্নতি অর্থাৎ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা এবং বাংলার মেধা ডেটা সেন্টার তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলায় বেকার যুবক-যুবতীরা দেশের অন্যান্য স্মার্ট সিটির তুলনায় অনেক কম বেতনে কাজ করে থাকেন। বেঙ্গালুরু বা হায়দরাবাদ বা গুরুগ্রামে কোনও বাঙালি তরুণ-তরুণী যত বেতনে কাজ করছেন, তাদের কিছুটা কম বেতনেই কলকাতায় বা শিলিগুড়ি বা হলদিয়ায় কাজ করানো যায়। ডেটা সেন্টারের ক্ষেত্রে হ্যাকিং রুখতে অর্থাৎ অনলাইন নিরাপত্তার খাতিরে মেধার গুরুত্ব যেমন রয়েছে, তেমনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সাধারণ জীবনেও মারাত্মক প্রভাব ফেলার পর এই বিষয়ে উৎসাহ বেড়ে চলেছে।

রিলায়েন্স জিও-র ৪০ একর মেগা ক্যাম্পাস তৈরির কাজ চলছে বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি হাবে। সেটি বিশ্বমানের এআই দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ডেটা সেন্টার হিসেবে গড়ে উঠতে চলেছে। মাইক্রোসফট ও রিলায়েন্স কর্পোরেট আইটি পার্কের উদ্যোগে হচ্ছে এই মেগা ক্যাম্পাস। এই ডেটা সেন্টারটি ২০২৬ সালেই চালু হয়ে যাবে। এই কথা আগেই ঘোষণা করেছেন রিলায়েন্স চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি। দ্রুত গতিতে সেই কাজটিও এগোচ্ছে। নিউটাউনের ২৫০ একরের সিলিকন ভ্যালি হাবে এয়ারটেল নক্ষত্র ডাটা সেন্টার, এলটিআই মিন্দটির কাজ চলছে। এসটিটি অ্যান্ড এনটিটি ডাটা সেন্টারের উদ্বোধন হয়েছে। পাঁচ লক্ষ ২৫ হাজার বর্গফুটের আদানি এন্টারপ্রাইজেসের ডেটা সেন্টারটিও তৈরি হবে। নিউটাউনে এটির কাজও শেষ পর্যায়ে। এসটিটি আসলে সিঙ্গাপুরের এসটি টেলিমিডিয়া, দ্বিতীয় কেন্দ্র তৈরির কাজ হচ্ছে নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া-২তে। এনটিটি বা নিপ্পন টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া-২ তে চালু হয়েছে, মোট জায়গা ৬ লক্ষ বর্গফুট। রাজ্য ডেটা সেন্টার বাদে উল্টোডাঙায় এসটিটি কলকাতা ডিসি-১ উল্লেখযোগ্য।

এদিকে হুগলির উত্তরপাড়ায় হিরানন্দানি গ্রুপের ছাড়া নিউটাউনে ইউনিভার্সাল সাকসেস এন্টারপ্রাইজেস, টেকনো ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও কন্ট্রোলএস-এর সেন্টারগুলিও তৈরি হবে। সবমিলিয়ে কর্মসংস্থান ৩০-৪০ হাজার হতে পারে।