আর পাঁচটা দিনের মতো মঙ্গলবার সকালেও মন দিয়ে কাজ করছিলেন ডিউটি অফিসার। অন্যান্য সহকর্মীরাও এদিক-ওদিক বসে। মধ্য পঞ্চাশের এক প্রৌঢ় টেবিলের সামনে এসে একটি কাগজ ডিউটি অফিসারের দিকে এগিয়ে দিলেন। সেই কাগজ তখনও ঠিকমতো দেখে উঠতে পারেননি ডিউটি অফিসার। তার আগেই উল্টোদিকে থাকা প্রৌঢ় বললেন, ‘স্যার আমি করোনা পজিটিভ। এই নিন কাগজ।’
নিজের কাজে ডুবে থাকা ডিউটি অফিসার এবং সহকর্মীরা এই কথা শোনার পর রীতিমত ভূত দেখার মতো চমকে ওঠেন। হুলুস্থুল ঘটে যায় থানার মধ্যে। কি করা উচিত তা নিয়েই ছোটাছুটি শুরু। ঘটনাটি ঘটেছে এদিন বেলা ১১ টা নাগাদ টালিগঞ্জ থানায়।
Advertisement
একটি বেসরকারি কোভিড পরীক্ষাকেন্দ্রে টালিগঞ্জ থানা এলাকার লেক রোডের বাসিন্দা সন্তোষ গুপ্ত নিজের লালারস পরীক্ষা করান। ওই কেন্দ্র থেকে জানানো হয় যে তার রিপোর্ট পজিটিভ। এই রিপোর্ট দেখিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলে ওই পরীক্ষাকেন্দ্র।
Advertisement
এরপর ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের কাছ থেকে সন্তোষবাবু আরও কিছু জানতে চাইলে, তাকে বলা হয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য। এই কথা শুনেই তিনি সোজা চলে এসেছে টালিগঞ্জ থানায়। রিপোর্ট হাতে নিয়েই। এমনটাই দাবি সন্তোষবাবুর।
উনি যখন থানায় ঢোকেন তখন অবশ্য কোনও কিছুই পরীক্ষা করা হয়নি। আর পাঁচজন যেভাবে থানায় ঢোকে অভিযোগ জানাতে, উনিও সেভাবেই সোজা চলে যান ডিউটি অফিসারের টেবিলে। কিন্তু করোনা পজিটিভ বলায়, প্রথমেই পুলিশের অনেকেই চমকে যান। পরে অবশ্য দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে সন্তোষবাবুকে বলা হয় বাইরের বেঞ্চে বসতে।
এরপর পুলিশ যোগাযোগ করে স্বাস্থ্য দফতরে। তারপর প্রায় ঘণ্টাদেড়েক পর স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা টালিগঞ্জ থানায় এসে কোভিড রোগীদের জন্য নির্ধারিত অ্যাম্বুলেন্সে সন্তোষবাবুকে নিয়ে যায় এম আর বাঙ্গুরে। জীবাণুমুক্ত করা হয় টালিগঞ্জ থানা। তবে, আতঙ্কের রেশ এখনও কাটেনি পুলিশকর্মীদের মধ্যে।
Advertisement



