সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন হঠাৎ করেই পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সাংসদদের পৃথকভাবে ডেকে পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লির সংসদ ভবনের দপ্তরে বুধবার সকালে এই বৈঠক হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। রাজ্যের রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিভিন্ন ইস্যুতে কেন্দ্র–রাজ্যের সংঘাত, এবং সাম্প্রতিক আইন–শৃঙ্খলা নিয়ে বিতর্কের পটভূমিতে এই বৈঠক বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
বিজেপি সূত্রের দাবি, এটি ‘রুটিন বৈঠক’। তবে বিজেপির রাজ্য ইউনিটে সাম্প্রতিক অসন্তোষ, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা, এবং নির্বাচনের প্রস্তুতির মতো বিষয় সামনে আসায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে বিষয়টি মোটেও সাধারণ নয়। পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকসভায় ১২ জন এবং রাজ্যসভায় ২ জন বিজেপি সাংসদ রয়েছেন। সবাইকে এই বৈঠকের জন্য ডাকা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
Advertisement
রাজ্যে সম্প্রতি বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের অংশগ্রহণ, উন্নয়ন–সংক্রান্ত কাজের বেগতিক, এবং সাংগঠনিক বিভ্রান্তি — সব মিলিয়ে বিজেপির অন্দরে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব চায় সাংসদদের মধ্যে আরও সুসংহত যোগাযোগ তৈরি হোক এবং রাজ্যে দলের ভবিষ্যৎ রূপরেখা স্পষ্ট করা হোক। সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রী নিজে সমস্ত সাংসদকে একসঙ্গে বসে শুনতে চান বলে দলীয় নেতাদের ধারণা।
Advertisement
দিল্লির বিজেপি দপ্তর–সূত্রের মতে, বৈঠকে সাংসদদের কাজের খতিয়ান, কেন্দ্রে চলে আসা রাজ্য–সংক্রান্ত নথিপত্রের অগ্রগতি, এবং আগামী মাসগুলিতে বিজেপির প্রচার কৌশল নিয়ে পর্যালোচনা হতে পারে। কেউ কেউ মনে করছেন, রাজ্যের সংগঠনে আরও কিছু বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিতও এই বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।
বৈঠককে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে উষ্ণতা বাড়লেও বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, ‘দলগত কাজের সমন্বয় সাধনই প্রধান উদ্দেশ্য’। তবে তৃণমূল–সহ বিরোধী দলগুলি দাবি করেছে, ‘রাজ্যে বিজেপির সাংগঠনিক ভাঙন এবং ক্রমকমে মাটিতে প্রভাব কমে যাওয়ার কারণেই প্রধানমন্ত্রীকে এই হঠাৎ উদ্যোগ নিতে হয়েছে।’
বৈঠক শেষে সাংসদরা কী বলেন এবং কেন্দ্রীয় দল কোন সিদ্ধান্ত নেয়, তার উপরই নির্ভর করবে আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রাজনৈতিক কৌশল কোন পথে এগোয়।
Advertisement



