দেশজুড়ে চিকিৎসক সংগঠনগুলির আন্দোলনের মুখ এখন এনআরএস

এনআরএস কান্ডের প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়ে দিল্লির এইমসের ডাক্তাররা হেলমেট ও ব্যান্ডেজ পরে চিকিৎসা করলেন (Photo: IANS)

রােগী মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযােগ তুলে হাসপাতালে চড়াও হওয়ার ঘটনা এ রাজ্যে নতুন নয়। হাতের সামনে পাওয়া চিকিৎসককেই মারধর করে ক্ষোভ মিটিয়েছেন মৃতের পরিজনরা। বিক্ষুব্ধরা ভাঙচুর চালিয়েছে হাসপাতালে। সেখানে শুধু সরকারি হাসপাতালই নয়, বেসরকারি হাসপাতালেও এমন নজিরের সাক্ষী থেকেছে শহর থেকে জেলা।

তবে শুধু এ রাজ্যেই নয়, গােটা দেশেই চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। তাই এবার চিকিৎসকদের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে দেশজুড়েই চিকিৎসক সংগঠনগুলি গণ-আন্দোলনের পথে। সেখানে আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছে এনআরএস (নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল)।

জুনিয়র ডাক্তারদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবার শামিল হয়েছে দিল্লির এইমস (অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্স)। শুক্রবার কালাে ব্যাজ পরে প্রতিবাদ করবেন তাঁরা।


কলকাতার চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদের জল গড়িয়েছে দিল্লি পর্যন্ত। এনআরএস-এর জুনিয়র ডাক্তারদের মারধরের প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার হেলমেট ও ব্যান্ডেজ পরে চিকিৎসা করতে দেখা গেছে এইমস-এর ডাক্তারদের। তাঁরা রেসিডেন্ট ডক্টর অ্যাসােসিয়েশনের সদস্য।

প্রতীকী প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন। শুক্রবার প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করবে এইমসের চিকিৎসকরা। অন্য সংগঠনগুলিকেও এই প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দিল্লির এইমস-এর চিকিৎসকরা। এতদিন ধরে চিকিৎসকদের ওপর অন্যায় অত্যাচারের ঘটনায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল নিতান্তই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অন্দরমহলের বিষয়। তবে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় সেই ছাইচাপা আগুনই স্ফুলিঙ্গে পরিণত হয়েছে।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছিল। যার জেরে দূরদূরান্ত থেকে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবা পেতে হাসপাতালে এসে নাজেহাল দশা হয় রােগী ও পরিজনদের। এমনকি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রােগীকে দেখতে এসে দুর্ভোগের শিকার হন পরিজনরা।

সােমবার রাতের ঘটনার পর পরপর তিনদিন ধরে রাজ্যজুড়েই চিকিৎসা পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল। এখানেই শেষ নয়, সময়মতাে চিকিৎসা না পেয়ে এই ক’দিন রােগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১১ জুন একটি শিশুর জন্ম হয়। জন্মের পরেই শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। চিকিৎসকরা জানান, ওই শিশুটিকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হবে।

অভিযােগ, এনআরএস, আরজিকর, ফুলবাগান শিশু হাসপাতাল ঘুরেও ভেন্টিলেশন পরিষেবা পাওয়া যায়নি। সময়মতাে চিকিৎসা না পেয়েই শিশুটি মারা যায়। ডাক্তারদের কর্মবিরতিতেই কাঠগড়ায় তুলেছে মৃত শিশুটির পরিবার। চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে ক্ষুব্ধ রােগী ও তাদের আত্মীয়রা সকালে হাসপাতালের সামনে মিনিট দশেক পথ অবরােধ করেন। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় অবরােধ উঠে যায়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এনআরএসে আসে আইএমএ প্রতিনিধি দল।