ভর্তুকি বনাম ভাড়াবৃদ্ধির টানাপোড়েনে দ্বিতীয়টির দিকেই ঝুঁকে রইল বাস মালিক সংগঠন। রবিবার জয়েন্ট ফোরাম অফ বাস সিন্ডিকেট বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিল, ভাড়া না বাড়ালে রাজ্য সরকারের ঘোষিত ভর্তুকি নিয়ে বাস চালানো সম্ভব নয়। এদিন বেসরকারি বাস মালিক সংগঠন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সোমবার থেকে তারা রাস্তায় বাস নামাবেন না।
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী তিন মাস কলকাতার ছয় হাজার বেসরকারি বাস-মিনিবাস পিছু পনেরো হাজার টাকা ভর্তুকির কথা ঘোষণা করেছিলেন। রবিবারের বৈঠকে বাস মালিক সংগঠনগুলি সরকারি সাহায্য নিতে অস্বীকার করে ভাড়াবৃদ্ধির দাবিতেই অনড় রইল।
সরকারি সাহায্যের ক্ষেত্রে বিভাজনের অভিযোগও এনেছেন তারা। বাসমালিকদের বক্তব্য, লাগাতার ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং কোভিড পরিস্থিতির জন্য জেরবার হতে হচ্ছে প্রতিটি জেলার বাস ও মিনিবাস মালিকদের। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র কলকাতার বাস মালিকদেরই কেন অনুদান দেওয়া হবে? এই প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
কলকাতায় চলা বেসরকারি বাসমালিকদের অধিকাংশই জয়েন্ট কাউন্সিল অউ বাস সিন্ডিকেটের সদস্য। রবিবার তাদের ডাকা বৈঠকে যোগ দেয় অন্যান্য সংগঠনও। সকলেরই বক্তব্য করোনা পরিস্থিতিতে যত সিট, তত যাত্রী– এই শর্ত মানতে হলে ভাড়াবৃদ্ধি ছাড়া কোনও বিকল্প রাস্তা নেই।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বারবারই বলছেন, বাসভাড়া বাড়ানো যাবে না। এই পরিস্থিতিতে সোমবার থেকে রাস্তায় বাস না নামানোর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হল রবিবারের বৈঠকে। বর্তমানে কলকাতা ও বৃহত্তর কলকাতায় প্রতিদিন হাজার দেড়েক সরকারি বাস চলে।
আনলকডাউন-ওয়ান পর্বে শর্ত মেনে বাস-মিনিবাস পুরোদমে চালানোর অনুমতি দেওয়া হলেও শহরে মাত্র হাজার দুয়েক বাস-মিনিবাস চলছে। যার ফলে কোনওরকমে অফিস যাতায়াত করছিলেন যাত্রীরা। আজ থেকে সেই বাস-মিনিবাসও উধাও হয়ে গেলে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে উঠবে। কারণ সরকারি বাস বেশি করে চললেও এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব নয়। ফলে আজ চূড়ান্ত সমস্যায় পড়তে চলেছেন রাস্তায় বেরনো যাত্রীরা।
আজই অবশ্য পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে বাস মালিক সংগঠনের মিটিং রয়েছে। অন্যদিকে মেট্রো চলাচল নিয়েও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাজ্য সরকারের মতামত জানানোর কথা আজই। এখন জট কাটাতে রাজ্য সরকার কী ভূমিকা নেবে, সেটাই দেখার।