• facebook
  • twitter
Sunday, 21 December, 2025

খসড়া তালিকায় বাদ প্রায় ৬০ লক্ষ ভোটার

শুনানিতে ডাক পেতে পারেন আরও অনেকে

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

এসআইআর প্রক্রিয়ার পর প্রকাশিত প্রাথমিক খসড়া ভোটার তালিকায় বাদ পড়েছে প্রায় ৬০ লক্ষ ভোটারের নাম। এই তালিকা প্রকাশের পরেই শুরু হতে চলেছে শুনানি পর্ব। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, শুনানি শুরু হলে প্রাথমিকভাবে ডাক পেতে পারেন এনুমারেশন ফর্মে কোনও প্রোজেনি ম্যাপিং দেখানো হয়নি—এমন প্রায় ৩০ লক্ষ ভোটার। এর পাশাপাশি বিভিন্ন জেলার সন্দেহজনক তালিকায় থাকা ভোটারদেরও শুনানিতে ডাকা হবে।

কমিশনের নজরে এসেছে, বহু ক্ষেত্রেই বাবা-মা, দাদু-দিদা কিংবা ঠাকুরদা-ঠাকুমার সঙ্গে ভোটারের বয়সের ফারাক অস্বাভাবিকভাবে কম। কোথাও আবার একই ব্যক্তিকে একাধিক ভোটার বাবা-মা বা দাদু-দিদা হিসেবে দেখিয়েছেন। এই ধরনের ‘সন্দেহজনক প্রোজেনি ম্যাপিং’-এর তালিকা বর্তমানে ঝাড়াই-বাছাই করছে নির্বাচন কমিশন। প্রথমে এই সংখ্যাটা ছিল প্রায় ১ কোটি ৬৭ লক্ষ। প্রাথমিক যাচাইয়ের পর আপাতত তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩৬ লক্ষে। এই তালিকা থেকেই ধাপে ধাপে শুনানির জন্য ডেকে পাঠানো হবে।

Advertisement

ঝাড়াই-বাছাই পর্বে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে। কমিশন সূত্রে খবর, দাদু-দিদা বা ঠাকুরদা-ঠাকুমার নাম ব্যবহার করে প্রোজেনি ম্যাপিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সন্দেহজনক ভোটারের খোঁজ মিলেছে মুর্শিদাবাদে। এই জেলাতেই রয়েছে ৪ লক্ষ ৭ হাজার ৬৫ জন সন্দেহজনক ভোটার, যা রাজ্যের মধ্যে সর্বাধিক। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, যেখানে এই সংখ্যা ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯১০। তৃতীয় স্থানে উত্তর ২৪ পরগনা, সেখানে সন্দেহজনক ভোটার ২ লক্ষেরও বেশি।

Advertisement

খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী, নাম বাদ পড়ার নিরিখেও শীর্ষে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সেখানে তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে ৮ লক্ষ ১৮ হাজার ৪৩২ জন ভোটার। উত্তর ২৪ পরগনায় বাদ পড়েছে ৭ লক্ষ ৯২ হাজার ১৩৩ জনের নাম। কমিশন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শুধু দুই ২৪ পরগনা জেলাতেই এখনও পর্যন্ত ছয় লক্ষের বেশি মৃত ভোটারের হদিশ মিলেছে। নিখোঁজ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ মানুষ।
উত্তর ২৪ পরগনার নোয়াপাড়া, বারাকপুর, দমদম উত্তর, খড়দহ, রাজারহাট, গোপালপুর ও বিধাননগর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার যাদবপুর ও কসবা বিধানসভা কেন্দ্রের বহু ভোটারের নামও খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। কমিশনের অনুমান, সব মিলিয়ে শুনানির জন্য ডাক পেতে পারেন আরও বহু ভোটার।

সন্দেহজনক ভোটার চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে কমিশনের অন্যতম মানদণ্ড হচ্ছে বয়সের ফারাক। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বহু ভোটারের সঙ্গে তাঁদের বাবা-মায়ের বয়সের ফারাক ১৫ বছর বা তারও কম। শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেই এই ধরনের ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৭০২। কমিশনের একাংশের মতে, কিছু ক্ষেত্রে তথ্যগত বা প্রযুক্তিগত ত্রুটি থাকতে পারে। তবে বড় অংশের ক্ষেত্রেই জালিয়াতির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

এখন সবার নজর ঝাড়াই-বাছাই এবং শুনানি প্রক্রিয়ার দিকে। এই বিশাল সংখ্যক ভোটারের তথ্য যাচাইয়ে নির্বাচন কমিশন কতটা কার্যকর ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে পারে, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষ—সকলেই।

Advertisement