• facebook
  • twitter
Sunday, 16 February, 2025

গ্রামোন্নয়নে কেন্দ্রের অর্থ পাবে নবান্ন

বাংলাকে ৭৪০ কোটি টাকা দেওয়ার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অধীনে চলতি অর্থবর্ষে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেতে চলেছে রাজ্য।

নবান্ন। ফাইল চিত্র

বাংলাকে ৭৪০ কোটি টাকা দেওয়ার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অধীনে চলতি অর্থবর্ষে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেতে চলেছে রাজ্য। এই টাকা গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়নে খরচ করতে পারবে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি দিল্লির তৈরি করা ঝড়প্রবণ রাজ্যের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এই দুটি ইস্যুকে নিজেদের ‘রাজনৈতিক’ জয় বলে দাবি করছে তৃণমূল কংগ্রেস।

লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই একাধিক বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাকে বঞ্চনার ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিভিন্ন জনসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এই নিয়ে আক্রমণ করেছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বরা। নিজেদের তহবিল থেকে ১০০ দিনের কাজের কর্মীদের বকেয়া মজুরি দিয়ে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছিল রাজ্য। সব মিলিয়ে প্রায় ৫২ লক্ষ মানুষের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে গিয়েছিল টাকা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বরাদ্দও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলার বাড়ি প্রকল্পের অধীনে লক্ষ লক্ষ বাড়ি তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। ১২ লক্ষ উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে। সম্পূর্ণ টাকাই দিয়েছে রাজ্য সরকার।

এই সব ইস্যু তুলে বিভিন্ন জনসভায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে দলের নেতৃত্বরা ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন। এর ফলে লোকসভা নির্বাচন সহ বিধানসভার উপনির্বাচনে বাংলায় লাভবান হয়েছে তৃণমূল। বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। লোকসভার ক্ষত সামলে এই নির্বাচনে কোমর বেঁধে মাঠে নামবে বিজেপি। তাই কেন্দ্রের বঞ্চনা ইস্যুতে তৃণমূল যাতে আর নির্বাচনে সুবিধা করতে না পারে সেই কারণে এই বরাদ্দ বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। নির্বাচনের আগে এই বরাদ্দকে জনংসযোগের কাজে লাগাতে পারবে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।

২০২০-২০২১ অর্থবর্ষ থেকে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন কাজ শুরু করেছিল। যার মেয়াদ প্রায় শেষের মুখে। ইতিমধ্যে ষোড়শ অর্থ কমিশন গঠন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিছুদিন আগে সেই কমিশনের শীর্ষকর্তারা রাজ্যে এসে সর্বদল বৈঠক করেছেন। অর্থ কমিশনে দুই ধরনের তহবিল থাকে। একটি শর্তাধীন তহবিল। অন্যটি নিঃশর্ত তহবিল। রাজ্য গ্রামোন্নয়ন খাতে যে টাকা পেতে চলেছে তা নিঃশর্ত তবহিলের টাকা। এই টাকা যে কোনও পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।

শর্তাধীন তহবিলের টাকা মূলত জল সরবরাহ এবং নিকাশির কাজে খরচ করতে হয়। ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ১৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা পেয়েছে রাজ্য। বাকি টাকা পাওয়ার বিষয়ে কিছুদিন আগে থেকেই উদ্যোগ নিতে শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। কেন্দ্র থেকে আসা টাকা খরচের বিষয়ে পিছিয়ে থাকা ৮টি জেলাকে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। কারণ কেন্দ্র যেন বলতে না পারে যে টাকা পাঠানো হলেও তা খরচ করতে পারেনি রাজ্য সরকার।

অপরদিকে, কেন্দ্রের ঝড়প্রবণ রাজ্যের তালিকায় রয়েছে বাংলার নাম। প্রতি বছরই ঘূর্ণিঝড় ও দুর্যোগের কারণে রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘর ছাড়া হন প্রচুর মানুষ। এই কারণে রাজ্য সরকারের দাবি ছিল, বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলার জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আরও বাড়ানো হোক। এবার ঝড়প্রবণ রাজ্যের তালিকায় বাংলার নাম থাকায় কেন্দ্রীয় বরাদ্দ ও সুবিধা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।