কফি ব্যারন সিদ্ধার্থের মৃত্যুতে ফেসবুকে শােকপ্রকাশ করে এই ঘটনায় কেন্দ্রকে নিশানা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার নবান্নে তিনি বললেন, সিদ্ধার্থের মতাে দেশের বহু শিল্পপতিকে বিভিন্ন এজেন্সি দিয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে। আয়কর দপ্তর, ইডি ইত্যাদি এজেন্সিকে ভয় দেখানােয় বহু শিল্পপতি দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন কিংবা আত্মহত্যা করেছন। এটা দেশের পক্ষে ভালাে লক্ষণ নয়।
কফি কিং সিদ্ধার্থের মৃত্যুতে, আয়কর দফতরের কয়েকজন অফিসারের ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কর্ণাটক কংগ্রেস। সেই সূত্র ধরেই কেন্দ্রীর সরকারকে আক্রমণ করে ফেসবুক পােস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি লিখেছেন, ‘ভি জি সিদ্ধার্থের মৃত্যুতে পরিণতি দেখে স্তম্ভিত। খুবই দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। মনে হচ্ছে, বিভিন্ন সংস্থার চাপ হেনস্থার মুখে পড়েছিলেন তিনি। সেজন্য শান্তিতে ব্যবসা করতে পারছিলেন না। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পারছি যে, এই দেশের বহু শিল্পপতিই চাপে রয়েছেন। অনেকে দেশ ছেড়ে দিয়েছেন। অনেকে আবার দেশ ছাড়ার কথা ভাবছেন। প্রতিটি বিরােধী দলই ঘােড়া কেনাবেচা, হেনস্থা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটানাের আতঙ্কে তটস্থ।
শুধু ফেসবুক পােস্টই নয়, মমতা এদিন নবান্নে দেশজুড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থার বেসরকারিকরণ, বেকারিত্ব বৃদ্ধি, আর্থিক বৃদ্ধি থমকে যাওয়া ইত্যাদির প্রসঙ্গ তুলেছেন। উন্নাওয়ের ঘটনা নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন। সৈনিক অফিসারকে গণপিটুনির নিন্দা করেছেন।
নাম না করে মােদিকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘কী হচ্ছে সবাই দেখতে পাচ্ছে। আরে ভাই, তুমি জিতেছ, ভালাে করে কাজ কর। কিন্তু তা না করে গত পাঁচ বছরে যা চলছিল, সেটাই চলছে’।
ঘােড়া কেনা বেচা, শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে এজেন্সি লেলিয়ে দেওয়া এবং বিভিন্ন সংস্থা এমনকী সংবাদ মাধ্যমের ওপর খবরদারি করা- দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর কেন্দ্রীয় সরকারের এই বিষয়গুলি প্রকট হয়ে উঠেছে।
সিদ্ধার্থের পরিণতিকে সামনে রেখে বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রকে এই ইস্যুগুলি নিয়ে আক্রমণ করেন। এয়ার ইন্ডিয়া, বার্ন স্ট্যান্ডার্ড, চিত্তরঞ্জন লােকোমােটিভ, অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরির মতাে ৪৫ টি সংস্থার বিলগ্নিকরণ নিয়ে কেন্দ্রের সমালােচনা করেন।
এই প্রসঙ্গে তিনি ফেসবুকেও লিখেছেন, ‘শিল্প, কৃষি এবং কর্মসংস্থানের ওপর দেশের ভবিষ্যৎ দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু শিল্পপতিদের ওপরই যদি এভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়, তাহলে শিল্পপতিরা দেশ থেকে চলে যাবেন। ফলে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি ব্যাহত হবে, কর্মসংস্থান হবে না।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং এজেন্সির অপব্যবহার যেন আমাদের দেশের ভবিষ্যৎকে নষ্ট না করে দেয়। এর আগেও মােদি সরকারকে এই ইস্যুগুলি নিয়ে আক্রমণ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লােকসভা নির্বাচনের পর ফের নতুন করে ইস্যুগুলি নিয়ে সরব হলেন মমতা। বুধবার নবান্নে রাজ ঠাকরে আসার পর তাঁর সামনেই মােদি সরকারকে আক্রমণ করেন মমতা।