শেষ দফার নির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে নরেন্দ্র মােদির বিরুদ্ধে জোরালাে আক্রমণ শানালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সােমবার নামখানা, বজবজ, মেটিয়াবুরুজে জনসভায় মমতার প্রচার ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে।
সােমবার তৃণমুলের রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আট বছর পূর্তির দিনে মমতা কাঠগড়ায় তুললেন বিজেপি’কে। তিনটি নির্বাচনী জনসভাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর অপব্যবহার নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হলেন মমতা। নামখানায় মমতা অভিযােগ করেন, আর কে মিত্র নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কীভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বাংলার বিরুদ্ধে উসকানি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গ্রামে ঢুকে গুলি চালানাের তীব্র নিন্দা করেন মমতা। বজবজ এবং মেটিয়াবুরুজেও মমতা অভিযােগ করেন বিজেপি’কে রক্ষা করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
Advertisement
এদিন মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁর পরিবার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও শুধুমাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে এসেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ‘ভাতিজা’কে নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এদিন তিনি প্রকাশ্য জনসভায় জানান, আমি অভিষেককে রাজ্যসভায় পাঠাতে চেয়েছিলাম, সাংসদ পদে লড়াই না করতেও বলেছিলাম। কিন্তু ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রের প্রতি দুর্বলতার জন্যই আভিষেক নিজে থেকেই এই লড়াইতে নামতে চেয়েছে।
Advertisement
মমতা এদিন বর্তমান শাসকের সময়ে ডায়মন্ডহারবার লােকসভা কেন্দ্রে উন্নয়নমূলক কাজের তালিকা পেশ করেন। ডায়মন্ডহারবারে মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বজবজে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্লাস্টার, টেক্সটাইল পার্ক, আর্সেনিকমুক্ত জলের প্রকল্পের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। বসিরহাটের মতাে ডায়মন্ডহারবারকেও আগামী দিনে জেলা ঘােষণা করার প্রতিশ্রুতি দেন। নামােনার জনসভায় সুন্দরবনে গভীর সমুদ্রবন্দর না গড়া এবং তাজপুর বন্দরের সিংহভাগ অংশীদারী নিয়েও মুড়িগঙ্গায় সেতু না তৈরি করা ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনাকে তুলে ধরেন। আগামীদিনে তিন-চারবছর সময় পেলে তৃণমূল সরকার যে সাগরগামী লােহার ব্রিজ তৈরি করে দেবে সেকথা ঘােষণা করেন।
বজবজের সভাতে মমতা বলেন, আগামী দিনে তৃণমুলের চতুর্থ প্রজন্ম পর্যন্ত তৈরি করাই তার লক্ষ্য। সেই কারণেই অভিষেকের মতাে যুব নেতাদের তিনি দলের মুখ করে তুলতে চান। সাংসদ হিসেবে অভিষেক যে কোনও ব্যক্তিগত সুযােগ সুবিধে তাঁর কাছে পান না, সেকথাও জানিয়ে দেন। বাঙালিকে কাঙালি বলায় অমিত শাহের নিন্দা করেন। এমনকী নরেন্দ্র মােদির অর্থহীন কথার রেশ ধরে তাকে ‘মাথামােটা’, ‘অপদার্থ’ বলে বিদ্রুপ করতেও শােনা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
মেটিয়াবুরুজের জনসবাতেও মমতা বলেন, আমি অনেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করেছি, কিন্তু এত ভদ্র প্রধানমন্ত্রী আমি জীবনে দেখিনি। বিভিন্ন ইস্যুতে নরেন্দ্র মােদিকে আক্রমণ ছাড়াও বিজেপির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বার্তা দেন।
Advertisement



