• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

প্রশাসনকে কাজ করতে দিন, ট্যাব কাণ্ড নিয়ে মমতা

অবশেষে ট্যাব কেলেঙ্কারি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনকে প্রশাসনের কাজ করতে দেওয়া হোক বলে এদিন মন্তব্য করেন মমতা।

অবশেষে ট্যাব কেলেঙ্কারি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনকে প্রশাসনের কাজ করতে দেওয়া হোক বলে এদিন মন্তব্য করেন মমতা। তিনি আশ্বাস দেন, যে সব পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকেনি তারা টাকা পেয়ে যাবেন। রাজ্যের প্রশাসনকে ”রাফ অ্যান্ড টাফ” বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরজি কর কাণ্ড নিয়ে সমালোচনার পর ফের ট্যাব কেলেঙ্কারি নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য সরকার। পুজোর আগেই একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা করে ঢুকেছিল। ”তরুণের স্বপ্ন” প্রকল্পের মাধ্যমে এই টাকা দেওয়া হয়েছিল। অনেক যোগ্য পড়ুয়া এই টাকা পায়নি বলে সম্প্রতি অভিযোগ উঠতে শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে কয়েকদিন আগে নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। রাজ্য পুলিশের ডিজি সহ কয়েকটি জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের নিয়ে এই বৈঠকে ট্যাব কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত বিভিন্ন আলোচনা হয়। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ১৫টি জেলার অন্তত ১৩৫০ জন পড়ুয়া ট্যাব কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলেছে। তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই সিট গঠন করেছে কলকাতা ও মালদহ জেলা পুলিশ। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১১ জনকে।

Advertisement

সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সফর সেরে শুক্রবার কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে বাগডোগরা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”ট্যাব কেলেঙ্কারি নিয়ে সিট গঠন করা হয়েছে। এটা প্রশাসনের কাজ। প্রশাসনকে করতে দিন।” তিনি আরও বলেন, ”এই ঘটনা মহারাষ্ট্র, রাজস্থান-সহ একাধিক রাজ্যে ঘটেছে। এই গ্রুপটাকে আমরাই ধরতে পেরেছি। সুতরাং, আমাদের প্রশাসন খুব স্ট্রং। রাফ অ্যান্ড টাফ। ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকি যা যা করার, তারা করবে। ট্যাবের যারা টাকা পায়নি, তারা পেয়ে যাবে।”

Advertisement

২০২১ সাল থেকে ”তরুণের স্বপ্ন” প্রকল্প চালু করে রাজ্য সরকার। এতদিন শুধুমাত্র দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য টাকা দেওয়া হত। কিন্তু এই বছর থেকেই একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদেরও এই প্রকল্পের আওতায় যুক্ত করা হল। স্কুল কর্তৃপক্ষই যোগ্য পড়ুয়াদের নাম, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরের তালিকা তৈরি করে শিক্ষা দপ্তরে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। সেই তালিকার ভিত্তিতেই ট্যাবের টাকা পড়ুয়াদের অ্যাকউন্টে জমা পড়ে। যদিও এবছর অনেক পড়ুয়া অভিযোগ করেন, তাদের অ্যাকাউন্টে ট্যাবের কোনও টাকাই ঢোকেনি। ট্যাব কেলেঙ্কারির অভিযোগ সামনে আসার পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়ে দেন, এরপর থেকে শিক্ষকরা নন, পড়ুয়ারাই ট্যাব সংক্রান্ত তথ্য পোর্টালে আপলোড করবে।

পুলিশ জানিয়েছে, ট্যাব কেলেঙ্কারির টাকা যেসব অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে সেগুলি ভাড়া নেওয়া অ্যাকাউন্ট। ৩০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে অ্যাকাউন্টগুলি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। ভাড়া করা সেই অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার ২ ঘণ্টার মধ্যেই তা তুলে নেওয়া হয়। টাকা তোলার আগে কয়েকটি অ্যাকাউন্ট কয়েকটি অ্যাকাউন্ট ব্লক বা ফ্রিজ করা হয়েছিল। যে সব কম্পিউটার থেকে জালিয়াতি করা হয়েছে সেগুলির আইপি অ্যাড্রেস চিহ্নিত করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, এগুলি মূলত উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ও তার আশপাশের এলাকার। পাশাপাশি এই ঘটনায় জামতাড়া গ্যাং জড়িত থাকারও অভিযোগ সামনে আসছে। ট্যাব কেলেঙ্কারির চক্র দেশের একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে বলে মনে করছে তদন্তকারীরা। কারণ এই জালিয়াতির টাকা বিহারের কিষানগঞ্জ মধ্যপ্রদেশের রায়পুর সহ একাধিক শহরের একাধিক অ্যাকাউন্টেও গিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

কলকাতার বিমানে ওঠার আগে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে মমতা নিজের পাহাড় সফর নিয়ে কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, ”আমার পাহাড় সফর খুব ভালো হয়েছে। চারটি স্কিল ট্রেনিং সেন্টার পাহাড়ে হবে। শিলিগুড়িতে একটা রয়েছে। এতে প্রচুর ছেলেমেয়ে ট্রেনিং পাবে এবং চাকরির সুযোগ পাবে।”

Advertisement