নবান্নের দায়িত্বজ্ঞানহীন আমলার আচরণে ক্ষুব্ধ মমতা

করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে লন্ডন থেকে ফিরে ডাক্তারি পরীক্ষা না করে এক তরুণের শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোয় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Written by SNS Kolkata | March 19, 2020 6:58 pm

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: Kuntal Chakrabarty/IANS)

করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে লন্ডন থেকে ফিরে ডাক্তারি পরীক্ষা না করে এক তরুণের শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোয় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তা-ই নয়, করোনা সংক্রমণের নিশ্চয়ক পরীক্ষা না করানোয় ওই করোনা আক্রান্নে মা তথা নবান্নের আমলার দায়িত্বজ্ঞানহীতায় উষ্ম প্রকাশ করলেন মমতা । 

কড়া বার্তা দিয়ে বললেন, পরিবারের কেউ প্রভাবশালী এই সুযোগ নিয়ে স্বাস্থ্য বিধি লঙঘন করে জনবহুল স্থানে ঘোরাঘুরি করে সংক্রমণ বাড়াবেন না। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন বিদেশ থেকে এলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান, কয়েকদিন নিজেরাই আইসোলেশনে থাকুন। সবার জন্যই এক নিয়ম প্রযোজ্য হবে বলেও হুশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। 

করোনা সতর্কতা হিসেবে সরকারি কর্মচারীদের কাজের সময়সীমা খানিকটা কমিয়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে বিকেল চারটের সময় ছুটি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। 

বুধবার নবান্নে শতাধিক অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন করার অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নাম না করে নবান্নের আমলার দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশ থেকে বাড়িতে আসতেই পারেন। ওখানে স্কুল কলেজ ছুটি পড়ে গিয়েছে। কিন্তু তাদের পরিবার পরিজন এখানে আছে। এখানে ফিরতে তো কেউ বাধা দিচ্ছে না। ৯৫ হাজার বিদেশি কলকাতায় এসেছেন। আরও আসবেন। এদেশে আসাতে কোনও বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু সেজন্য নিয়ম ভাঙা যাবে না। বিদেশ থেকে এলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা কতে হবে। ১৫ থেকে ২৭ দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে। সকলের জন্যই এক নিয়ম প্রযোজ্য হবে। প্রভাব খাটিয়ে কোনও প্রভাব খাটানো যাবে না। এখানে ভিআইপি আর এলআইপি বলে আলাদা কিছু নেই। 

সরকারি উচ্চপদস্থ আমলার ছেলের করোনা সংক্রমণের সম্ভান্না নিয়ে লন্ডন থেকে এদেশে ফেরার পরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে না যাওয়ায় যারপরনাই ক্রুদ্ধ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন ওই সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তি না হয়ে শপিং মল, রেস্তোরাও ঘুরে বেরিয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষা না করেই। এর চেয়ে অবিবেচকের মতো কাজ আর কিছু হতে পারে না। 

এমনকী ছেলেটির মাও যে করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে থাকার পর নবান্নে এবং মহাকরণে কাজ করেছেন, তাতেও অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী। ওই আমলা স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে যাওয়ায় তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও হোম আইসোলেশনে থাকতে হচ্ছে। এর ফলে নবান্নের প্রশাসনিক কাজকর্মেও অসুবিধে হচ্ছে। 

মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এদিন করোনা নিয়ে অযথা গুজব না ছড়াতে বলেছেন। করোনা রোখায় সবরকম সতর্কতা মেনে চলতে ফের অনুরোধ করেন। বাস ট্রামের ভিড় এড়াতে সরকারি কর্মচারীদের বিকেল চারটের মধ্যেই ছুটি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।