রবিবারেও ফোনের ওপর ফোন পাচ্ছিলেন ঋত্বিক গােস্বামী। থমথমে মুখে একই জবাব দিতে হচ্ছিল। সকলকেই- ‘ভরসা রাখুন’। শনিবার বাজেট বক্তৃতায় এলআইসির বিলগ্নিকরণের কথা ঘােষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
এরপর থেকেই স্থানীয় এজেন্টরা গ্রাহকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে রীতিমতাে হিমশিম খাচ্ছেন। সবে শুরু, এরপর পুরনাে গ্রাহকদের প্রশ্নবাণ আরও বাড়বে এবং মানুষকে বিমা করানাের জন্য রাজি করানাে আরও শক্ত হবে বলেই মনে করছেন এলআইসি এজেন্টদের একাংশ।
Advertisement
বর্তমানে এই বিমা সংস্থাতে প্রায় ১২ লক্ষ এজেন্ট কাজ করেন। বাজারে ২৩টি বেসরকারি বিমা সংস্থার সঙ্গে টক্কর দিয়েও জীবন বিমা’র ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ বিনিয়ােগ রয়েছে এলআইসিতেই। কিন্তু এই লাভজনক সংস্থার ক্ষেত্রেও বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত কেন? তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালােচনার ঝড় উঠেছে।
Advertisement
এদিকে নিজেদের গ্রাহকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এলআইসি এজেন্টদের। এলআইসি এজেন্ট প্রতাপচন্দ্র সাঁতরা জানান, শনিবার বাজেট প্রস্তাবনার পর সাধারণ মানুষ যাঁরা এলআইসিতে বিনিয়ােগ করেছেন, তাদের মনে প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক। ভবিষ্যতে নতুন গ্রাহকদের বিনিয়ােগের জন্য রাজি করানাে এবং তাদের অর্থ সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে, এটা আশ্বস্ত করা অনেকাংশেই কঠিন হতে চলেছে বলেও জানান প্রতাপবাবু।
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এলআইসি এজেন্ট অরিন্দম বসু জানান, শনিবারের পর থেকে বেশ কিছু গ্রাহক ফোন করেছেন। তিনি জানান, এতদিন পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে এলআইসিতে বিনিয়ােগের জন্য রাজি করানােটা সহজ হত, যেহেতু সরকারি অংশীদারিত্ব ছিল। কিন্তু যদি এক্ষেত্রেও বিলগ্নিকরণ হয়, সেক্ষেত্রে অন্যান্য বেসরকারি বিমা সংস্থার সঙ্গেও প্রতিযােগিতা করতে হবে এবং অর্থ সুরক্ষা প্রসঙ্গে সাধারণ মানুষকে আলাদা করে সম্পূর্ণ আশ্বস্ত করা কঠিন হবে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে পুরনাে গ্রাহকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতেও কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে এই এজেন্টদের। এলআইসি এজেন্ট মিনহাজ খান জানান, রবিবার সকাল থেকে ৩ জন গ্রাহক ফোন করে বেসরকারিকরণ প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছেন। তাদের কি উত্তর দেব ভেবে পাচ্ছি না, জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ৪ ফেব্রুয়ারি দেশের ২০৪৮টি এলআইসি শাখা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হলে আন্দোলন আরও জোরাল হবে, সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানাে হয়েছে এমনটাই।
Advertisement



