বঙ্গ রাজনীতিতে একদা কংগ্রেস তথা বর্তমান তৃণমূল সুপ্রিমাে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার ঘটনাটি সবাই কমবেশি জানেন। সেই ১৯৯০ সালে ১৬ আগস্ট কলকাতার হাজরা মােড়ে বনধে তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার ঘটনাটি ঘটেছিল, যা রাজনৈতিকভাবে সেসময় বাম সরকারের কাছে বিরােধী নেত্রী হিসেবে মমতাকে অন্য মাত্রা দিয়েছিল।
রাজনৈতিকভাবে এই ঘটনাটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জননেত্রী হিসেবে উঠে আসার পথ হলেও আইনি লড়াইয়ে অভিযুক্ত সিপিএম নেতার পক্ষে সুখকর বলা যায়। যদিও, তৃণমূল সূত্রে খবর, অভিযুক্ত সিপিএম নেতা লাল আলমকে মানবিকতার খাতিরে অনেক আগেই ক্ষমা করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। বৃহস্পতিবার দুপুরে আলিপুর আদালতে বহুচর্চিত এই মামলার রায়দান ঘটে। তাতে বিচারক সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে এই মামলার মূল অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দান দিয়েছেন।
Advertisement
এই মামলার অভিযুক্ত এবং সাক্ষীদের অনেকেই মারা গেছে, আবার বেশ কয়েকজন পলাতক ছিল। পুলিশি তদন্তে তৎপরতা ছিল না বললেই চলে। প্রায় ২৯ বছর ধরে এই মামলা চলছিল। আদালত সূত্রে প্রকাশ, ১৯৯০ সালে ১৬ আগস্ট কলকাতার হাজরা মােড়ে প্রদেশ কংগ্রেসের ডাকা বন্ধ পালনে অবস্থান বিক্ষোভে ছিলেন তৎকালীন রাজ্য কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Advertisement
এই বন্ধ তুলতে গিয়ে স্থানীয় সিপিএম নেতা লালু আলমের দলবল হাতে বাঁশ নিয়ে বিক্ষোভ মঞ্চে হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযােগ। এতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুতর জখম হন। সপ্তাহখানেক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। ভবানীপুর থানায় এই ঘটনায় লিখিত অভিযােগ দায়ের করা হয়। সেখানে ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। আলিপুর আদালতে পুলিশি তদন্তে গাফিলতির জন্য মামলাটি দীর্ঘয়িত হয় বলে অভিযােগ ওঠে।
প্রায় ২৮ বছর পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয় আদালতে। চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে শুনানি শুরু হয়। গত ২১ আগস্ট অভিযােগকারী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ভিডিও কনফারেন্সের তারিখ ছিল। তবে আলিপুর আদালতে ভিডিওগ্রাফি সাক্ষ্যগ্রহণের কোনও পরিকাঠামােগত ব্যবস্থা না থাকায় সেটি নথিভুক্ত হয়নি। অভিযুক্তদের এবং সাক্ষীদের একাংশ যেমন মারা গেছে, ঠিক তেমনি একাংশ আবার পলাতক ছিল। সেদিনের হামলায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে কারও সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। তাই বিচারক এই মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে মূল অভিযুক্ত সিপিএম নেতা লালু আলমকে বেকসুর খালাস বলে রায়দানে জানিয়েছেন।
Advertisement



