• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

মহাসমাবেশ থেকে দিল্লি যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা 

'ভয়ের রাজনীতি'র প্রতিবাদে মহালয়ার দিন ফের পথে নামলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। কলেজ স্কয়ার থেকে মিছিল শুরু হওয়ার পরই তাতে সামিল হন অগণিত মানুষ। মিছিল মহামিছিলের রূপ নিতে বেশি সময় নেয়নি। সেই মহামিছিল এসে শেষ হয় ধর্মতলায়।  সেখানে রানী রাসমণি রোডে ছিল মহাসমাবেশের আয়োজন। সেই মহাসমাবেশ থেকেই দিল্লি যাওয়ার হুঙ্কার দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। 

‘ভয়ের রাজনীতি’র প্রতিবাদে মহালয়ার দিন ফের পথে নামলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। কলেজ স্কয়ার থেকে মিছিল শুরু হওয়ার পরই তাতে সামিল হন অগণিত মানুষ। মিছিল মহামিছিলের রূপ নিতে বেশি সময় নেয়নি। সেই মহামিছিল এসে শেষ হয় ধর্মতলায়।  সেখানে রানী রাসমণি রোডে ছিল মহাসমাবেশের আয়োজন। সেই মহাসমাবেশ থেকেই দিল্লি যাওয়ার হুঙ্কার দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। 
 
কলেজ স্ট্রিট থেকে দুপুর ২ টো নাগাদ শুরু হয় জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিবাদ মিছিল। মিছিলে পা মিলিয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা। সামিল হয়েছেন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে এবং সমাজের সর্বস্তরে ‘ভয়ের রাজনীতি’র প্রতিবাদে আয়োজিত এই মিছিলে পোস্টার, ব্যানার হাতে নিয়ে পা মেলান অগণিত মানুষ। মিছিলে অংশ নেন অভিনেত্রী সোহিনী সরকার, উষসী চক্রবর্তী। সংবাদমাধ্যমেরে সামনে উষসী বলেন, ‘মহালয়ার অর্থ অসুর নিধনের মাধ্যমে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটানো। সমাজে যে সমস্ত মানুষরুপী অসুর রয়েছে, যারা আমাদেরই আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের শাস্তির দাবিতে এই মিছিল। তাই যতদিন না তাদের বিনাশ সম্ভব হচ্ছে, ততদিন গ্রাম থেকে শহর সর্বত্রই উৎসব আর প্রতিবাদ হাতে হাত রেখে চলবে।’ 
 
কলেজ স্ট্রিট হয়ে মিছিল এগিয়ে যায় ধর্মতলার দিকে। বিজেপির পার্টি অফিস ছাড়িয়ে এগিয়ে চলে জুনিয়র চিকিৎসকদের মিছিল। এমজি রোড পেরিয়ে পৌঁছয় সেন্ট্রাল এভিনিউয়ে। পরস্পরের হাত ধরে মানব বন্ধন তৈরী করে এগিয়ে যান প্রতিবাদী হাজার হাজার মানুষ। মহামিছিল থেকে ফের স্লোগান ওঠে আরজি করের নির্যাতিতার দ্রুত বিচারের দাবির। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দীর্ঘায়িত তদন্ত প্রক্রিয়ার মতো স্লোগানও উঠে আসে। রাজপথ ধরে এগিয়ে যাওয়া এই মহামিছিলকে সমর্থন জানাতে দেখা যায় রাস্তার দুই ধারে, প্রতিটি মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা বহু মানুষকে। 
 
মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থেকে আসা সেরিফা খাতুন। সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে কোলে নিয়ে পা মেলান জুনিয়র চিকিৎসকদের ডাকা মিছিলে। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে যখন জুনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান চলছিল, সেই সময়ে তিনি কলকাতায় আসেন মেয়েকে নিয়ে। তার পর থেকে কলকাতাতেই রয়েছেন। সেরিফা জানালেন, দমদমে তাঁর আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন। এসেছেন বিচারের দাবিতেই ।
 
মহামিছিল গিয়ে পৌঁছয় ধর্মতলার রানী রাসমণি রোডে। এখানেই আয়োজন ছিল মহাসমাবেশের। মূল মঞ্চে ছিল তিনটি জায়ান্ট স্ক্রিন। মহাসমাবেশের এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজেদের বক্তব্য রাখেন কিঞ্জল নন্দ, অনিকেত মাহাতো, রুমেলিকা কুমার-সহ অন্যান্যরা। মহাসমাবেশ থেকে তাঁরা হুঁশিয়ারি দেন প্রয়োজনে দিল্লি যাওয়ার। দেবাশীষ হালদার বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন শুধু রাজ্য সরকারের কাছে নয়, আমরা সিবিআইকেও প্রশ্ন করছি।আমরা সিবিআইকেও ভরসা করতে পারছি না। কারণ আমরা দেখেছি, সিবিআই কেস হাতে নেওয়ার পর বহু কেস অমীমাংসিত রয়েছে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, আমরা কোন সেটিং হতে দেব না। দরকারে দিল্লি যাব। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করব।’
 
আন্দোলনে পাশে থাকার জন্য সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানান জুনিয়র চিকিৎসকরা। রুমেলিকা কুমার বলেন, ‘এত সাধারণ মানুষ  মিছিলে এসেছেন, পায়ে পা মিলিয়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছাড়া এই আন্দোলন সম্ভব হত না।’
 
জুনিয়র চিকিৎসকদের মহাসমাবেশে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখেন সোহিনী। তিনি বলেন, ‘এটা শুধু জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন নয়, আমাদের সবার আন্দোলন।আমাদের সবার মধ্যে একজন তিলোত্তমা আছে। আমরা সবাই নিজেদের স্বার্থে এখানে এসেছি। আমাদের আন্দোলন আগামী প্রজন্মের জন্য। আমরা ভয়ের রাজনীতি বাদ দিয়ে বাঁচতে চাই।’  
 
এদিকে ধর্মতলায় এদিন জুনিয়র চিকিৎসকদের মিছিলের অনুমতি দিতে রাজি ছিল না পুলিস। এই নিয়ে মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। ধর্মতলায় মিছিলের অনুমতি দেন  হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। সময়সীমা ছিল বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।  সন্ধে ৭ টা বাজতেই সেই জমায়েতে পৌঁছে যায় পুলিস। জুনিয়র চিকিৎসকদের  জানিয়ে দেওয়া হয়, আদালত দেওয়া সময়সীমা শেষ হয়েছে। সেই নির্দেশ মেনে কর্মসূচি শেষ করতে হবে। এরপরই কর্মসূচি শেষ করে দেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা।  

Advertisement

Advertisement