ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে হিন্দুত্বের আবহে এবার নতুন পদক্ষেপ কেন্দ্রের। বাংলায় ডাকঘরের মাধ্যমে ‘গঙ্গাজল’ বিক্রির কর্মসূচি তিনগুণ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্রের খবর, আপাতত রাজ্যের ৩৩৭টি পোস্ট অফিসে এই গঙ্গাজল পাওয়া গেলেও সেই সংখ্যা দ্রুত এক হাজারে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ এসেছে কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রকের তরফে। যদিও নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি, কিন্তু ভোটের আগে লক্ষ্য পূরণে জোর দিচ্ছে মোদি সরকার।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ভোটের মুখে হিন্দুত্বের আবহ জোরদার করতে এই কর্মসূচিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায় বিজেপি। তবে সরকারিভাবে বলা হচ্ছে, এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য কেবল পবিত্র গঙ্গার জল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া, যাতে ধর্মবিশ্বাসী মানুষ সহজে গঙ্গাজল সংগ্রহ করতে পারেন। ডাক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই এই প্রকল্পের সূচনা করে কেন্দ্র। গঙ্গার উৎসস্থল গঙ্গোত্রী ও হৃষীকেশ থেকে বিশুদ্ধ জল সংগ্রহ করে ২৫০ মিলিলিটার বোতলে প্যাকেজিং করা হয়।
Advertisement
বোতলের গায়ে স্পষ্টভাবে লেখা থাকে ‘গঙ্গাজল’। এর দাম ৩০ টাকা।বর্তমানে বাংলার পুরুলিয়া ডিভিশনের ২৪টি পোস্ট অফিসে গঙ্গাজল পাওয়া যায়। কলকাতায় জিপিও বাদে মধ্য কলকাতার ১১টি, উত্তর কলকাতার ১৪টি, পূর্ব ও দক্ষিণ কলকাতায় যথাক্রমে ১৭ ও ২০টি ডাকঘরে এই জল বিক্রি হচ্ছে। আসানসোলের ১১টি ডাকঘরেই বিক্রির হার সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে।
Advertisement
শহরের মধ্যে কলকাতা জিপিও, নিউ মার্কেট, বউবাজার, সিআর, মিডলটন ও যোগাযোগ ভবনের পোস্ট অফিসে গঙ্গাজলের চাহিদা তুলনামূলক বেশি। এমনকি শ্যামবাজার পোস্ট অফিসেও নিয়মিত বিক্রি হয় গঙ্গাজল। উৎসবের মরশুম ও চৈত্র মাসে এর বিক্রি বেড়ে যায় উল্লেখযোগ্যভাবে। এক ডাক আধিকারিকের কথায়, ‘চৈত্র মাসে অনেকেই ৮–১০ বোতল একসঙ্গে কেনেন। কেউ কেউ নিয়মিত পান করেন ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে।’
যদিও গঙ্গার আশেপাশের এলাকায় বিক্রি তুলনামূলকভাবে কম, তবুও দূরবর্তী জেলাগুলিতে ও গঙ্গার বাইরের রাজ্যগুলিতে এর চাহিদা বহুগুণ বেশি। রাজস্থান, গুজরাত, মহারাষ্ট্র ও দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে গঙ্গাজলের বিক্রি বেশ জনপ্রিয়।
ডাক বিভাগের দাবি, এই উদ্যোগ কেবল ব্যবসা নয়, এক ধরনের ধর্মীয় সেবাও। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, ভোটের আগে এই কর্মসূচিকে সামনে রেখে কেন্দ্র হিন্দুত্বের আবেগকে উস্কে দিতে চাইছে।
Advertisement



