• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

সমন্বয়ের নজির, কালীপুজোয় মুখ্যমন্ত্রীর  গৃহদ্বার খুলে যায় জনসাধারণের জন্য

সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা, প্রাক্তন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের মতো প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা।

কালীঘাটে নিজের বাড়ির কালীপুজোয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

বয়স সত্তরের দোরগোড়ায়, তবে বয়সের তোয়াক্কা না করেই সারাদিন উপোস থেকে শ্যামা মায়ের ভোগ রান্না করেন এবং শাস্ত্র মেনে কালীপুজোর প্রত্যেক কাজ নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ৪৭তম বর্ষে পদার্পন করা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপুজো এবার সেজে উঠেছিল পেঁচা এবং ধানের ছড়া অঙ্কিত মাটির ঘট দিয়ে। দীপান্বিতা অমাবস্যার কালীপুজোয় অর্থাৎ বছরের এই একদিন কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর গৃহদ্বার খুলে যায় আপামর জনসাধারণের জন্য। কালীঘাটের মানুষ তো বটেই, পাশাপাশি বহু দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির শ্যামা মায়ের দর্শনে। ব্যতিক্রম হলো না এবারও। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, অর্থনৈতিক বৈষম্য নির্বিশেষে বিপুল সংখ্যক আম জনতা বৃহস্পতিতে হাজির হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতার বাড়িতে। এদিন বাড়ির অন্দরে প্রবেশাধিকার থাকে প্রত্যেকেরই। কালীপুজোয় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে কেউই ফিরে যান খালি পেটে।

একদিকে যেমন সকলের জন্য ভোগের বন্দোবস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী, তেমনই অন্যদিকে প্রত্যেকের যত্ন নেন সন্তান-স্নেহে। কখনও জনসাধারণের দিকে এগিয়ে দেন পঞ্চপ্রদীপ আবার কখনও নিজেই আম জনতার কপালে পরিয়ে দেন যজ্ঞের টিপ। অসংখ্য মানুষ লাইন দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ভোগ গ্রহণ করেন এদিন। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায়, ‘আমার বাড়িতে স্মিতহাস্যবদনা মা কালীর আরাধনায় শামিল হলাম। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অগণিত ভক্তের সমাগম – এই স্থানকে আরো অনেক পবিত্র করে তুলেছে। মায়ের স্নিগ্ধ হাসির পরশ এবং আশিস যেন বাংলার সকল পরিবার পায় – এই প্রার্থনা জানালাম। আদ্যাশক্তির আশীর্বাদে সকল অশুভ শক্তির বিনাশ হোক। ত্রিলোকপালনকর্ত্রী শক্তিদেবীর কল্যাণ-দ্যুতি ছড়িয়ে পড়ুক বাংলার ঘরে ঘরে।’

Advertisement

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা, প্রাক্তন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের মতো প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। পাশাপাশি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়, রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ফিরহাদ-কন্যা প্রিয়দর্শিনী হাকিম, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার সহ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ এমনকি টলিউডের শিল্পীরাও উপস্থিত ছিলেন এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে। অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকিমা কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়রা, স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পুজোর জোগাড়ের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। যজ্ঞের সময়ও তাঁদের পাশাপাশি বসে শক্তি আরাধনায় ব্রতী হতে দেখা যায়। যজ্ঞ শেষে পঞ্চপ্রদীপ হাতে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জনসাধারণের কাছে পৌঁছে যান, আম জনতাও আগুনের আভা নিজ মাথায় ছুঁয়ে নেন। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির মহিলারাই কালীপুজোর বিশাল আয়োজন করেন প্রতিবার আর সেই সাড়ম্বরের অংশীদার হন কলকাতা তথা বঙ্গবাসী।

Advertisement

Advertisement