কলকাতা হাইকোর্ট ও বিভিন্ন নিম্ন আদালতের উন্নয়নমূলক কাজ আটকে থাকা সংক্রান্ত মামলায় এ বার রাজ্যকে হুঁশিয়ারি দিল হাইকোর্ট। সোমবার শুনানি চলাকালীন হাইকোর্ট জানায়, অবিলম্বে অর্থ ছাড়া না হলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে রাজ্যের অ্যাকাউন্ট নম্বর সিজ করার নির্দেশ দেওয়া হবে। এর প্রেক্ষিতে রাজ্যের অ্যাকাউন্ট নম্বরও চান বিচারপতিরা। যদিও রাজ্যের তরফে আদালতের কাছে সময় চাওয়া হয়। মামলার পরবর্তী শুনানিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবকে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আগামী ১০ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
আদালতের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য রাজ্য অর্থ বরাদ্দ করছে না বলে আগেই প্রশ্ন তুলেছিল হাইকোর্ট। অভিযোগ উঠেছে, রাজ্য অর্থ বরাদ্দ না করায় আদালতের ৩৬টি প্রকল্পের কাজ আটকে আছে। গত তিন বছর ধরে বিএসএনএলের বিল দেওয়া হয়নি। রাজ্য পাঁচ কোটি টাকার বেশি অর্থ আটকে রেখেছে। এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সোমবার রাজ্যের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি বসাক এজলাসে প্রশ্ন করেছেন, রাজ্যে কি আর্থিক জরুরি অবস্থা চলছে? বিল না মেটানোর কারণে বিএসএনএল যদি পরিষেবা বন্ধ করে দেয় তাহলে কী হবে? তিন বছর অনেকটা বেশি সময়। আদালতের কাজে অর্থ বরাদ্দ কি প্রশাসনিক কাজের মধ্যে পড়ে না? বিচারপতিরা আরও জানতে চান, কোন ব্যাঙ্কে রাজ্যের অ্যাকাউন্ট রয়েছে? সেই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী বলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কে রাজ্যের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এরপরই বিচারপতিরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে বলছি আদালতের অনুমতি ছাড়া যাতে কোনও টাকা না ছাড়া হয়।
বিচারপতিরা রাজ্যের অ্যাকাউন্ট নম্বর চাইলে রাজ্যের আইনজীবী ও রাজ্যের অর্থ দপ্তরের আধিকারিক জানান, তাঁদের কাছে অ্যাকাউন্ট নম্বর নেই। এরপরই বিচারপতিবার বলেন, মুখ্যসচিবের কাছ থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর জেনে তারপর যেন আদালতে জানানো হয়। হাইকোর্ট অ্যাকাউন্টটি সিজ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। যদিও রাজ্যের তরফে জানান হয়েছে, রাজ্য দুই দিনের মধ্যে বকেয়া টাকার অর্ধেক মিটিয়ে দেবে। এই নিয়েও রাজ্যকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতিরা। হাইকোর্টের বক্তব্য, বর্তমান সময়ে সঙ্গে সঙ্গে টাকা পাঠানো যায়। সেখানে টাকা পাঠাতে কেন দুই দিন সময় লাগবে রাজ্যের? রাজ্যের আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, বিলের ২.৯ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই মঞ্জুর করা হয়েছে। বাকি টাকা মঞ্জুরের জন্য আর কিছুদিন সময় দেওয়া হোক। পাশাপাশি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এই মামলায় সওয়াল করবেন। সেই কারণটিও বিবেচনা করা হোক। এরপরই আগামী ১০ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির নির্দেশ দেয় আদালত।
Advertisement