• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

সমাবর্তনে বিক্ষোভের ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের দিন বিক্ষোভের ঘটনায় বিশেষ কিছু বলেননি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। শুধু বলেছিলেন ব্যথিত হয়েছি।

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল তথা আচার্য জগদীপ ধনকড়। (File Photo: IANS)

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের দিন বিক্ষোভের ঘটনায় বিশেষ কিছু বলেননি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। শুধু বলেছিলেন ব্যথিত হয়েছি। ট্যুইট করে বলেছিলেন, শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ রাজ্য। বুধবার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বিস্ফোরক রাজ্যপাল তথা আচার্য জগদীপ ধনকড়। বললেন, গতকালের ঘটনা অনভিপ্রেত। রাজ্যের পক্ষে অন্ধকারতম দিন। নােবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডিলিট দেওয়ার গৌরবময় ঘটনার সঙ্গে আচার্য হিসেবে যুক্ত ছিলাম আমি। কিন্তু আমাকেই মঞ্চে উঠতে দেওয়া হয়নি। এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের ১৬৩ বছরের ঐতিহ্য ক্ষুন্ন হয়েছে।

রাজ্যপালের এই বক্তব্যকে খণ্ডন করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যপাল ছাত্র আন্দোলনকে অন্ধকার সময় বলেছেন। তাঁর মন্তব্যের সঙ্গে সহমত পােষণ করি না আমি।

Advertisement

সমাবর্তনের ঘটনা নিয়ে আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণে বুধবার সরব হলেন আচার্য এবং শিক্ষামন্ত্রী। অশিক্ষা আর অজ্ঞানের অন্ধকার দূর করতেই বসন্ত পঞ্চমীতে দেবী সরস্বতীর আরাধনা করা হয়। সংস্কৃত শ্লোকের অবতারণা করে সরস্বতী পুজোর দিনেই রাজ্যের অন্ধকার ভাবমূর্তির অভিযােগ করেন রাজ্যপাল। বলেন, টেলিভিশনে দেখেছি, ডিলিট নেওয়ার সময় অভিজিৎ নািয়ককে খুবই ‘ডিপ্রেসড’ দেখাচ্ছিল।

Advertisement

সমাবর্তনের দিন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডিলিট দেওয়ার দিনে যে বিক্ষোভ দেখানাের ঘটনা ঘটেছে, তা রাজ্যের গৌরবময় মুহূর্তকে ম্লান করে দিয়েছে। তবে এই ঘটনা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটেনি। এর নেপথ্যে ছিল অশুভ শক্তির হাত। উদ্দেশ্যপ্রণােদিতভাবে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিল বলে মনে করেন রাজ্যপাল। তাঁর মতে এই ঘটনায় শুধু ছাত্ররা নয়, বহিরাগতরাও যুক্ত ছিল।

রাজ্যপালের এই বহিরাগত তত্ত্বের সমালােচনা করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থবাবু বলেন, নােবেল পাওয়ার পর যে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন রাজ্যপাল, এখন তিনি বলছেন আমি ব্যথিত। উনি যে কখন কী বলেন, তা উনি নিজেই জানেন না।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের দিন ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়ে মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি রাজ্যপাল। গাে ব্যাক ধ্বনি, সিএএ বিরােধী ব্যানার ফেস্টুনে বিক্ষুব্ধদের আন্দোলনে তিনি সরাসরি অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ডিলিট উপাধি তুলে দিতে পারেননি। নজরুল মঞ্চের গ্রিন রুম থেকেই ফিরে আসতে হয়েছিল সমাবর্তনের দিন। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কি এই ২৮ জানুয়ারি দিনটির কথা কোনওদিন ভুলতে পারবে?

রাজ্যপালের কথায়, একথা তিনি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তুলছেন না, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এশিয়ার প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির প্রশ্ন। সমাবর্তনের দিনের অপ্রীতিকর ঘটনায় তাঁর ব্যক্তিগত ক্ষতি হয়নি, রাজ্যের মর্যাদা হানি হয়েছে। বলেও মনে করছেন জগদীপ ঘনকড়। শুধু তা-ই নয়, এই ধরনের ঘটনা বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্যে ঘটে চলেছে। তাঁর মতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জ্ঞানচর্চা ও শিক্ষাদানের কেন্দ্র। সেখানে সুস্থ পরিবেশ না থাকলে না থাকলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিযােগিতায় পিছিয়ে পড়বে পড়ুয়ারা। যে রাজ্য উক্তৃষ্ট মেধা ও প্রতিভার আলােয় আলােকিত, সেখানে অন্ধকারময় পরিস্থিতির অবসান ঘটবে বলেই আশা প্রকাশ করেন রাজ্যপাল।

Advertisement