শনিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযােগ তুলেছিলেন তাঁর ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে। ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।
রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা সরব হন রাজ্যপাল। শুধু রাজ্যপাল নন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ, এই রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা সরব হন।
Advertisement
রবিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় জানান, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কি তথ্য আছে তা জানা নেই। তবে এই রাজ্যেও বহু ব্যক্তির গােপনীয়তা ভঙ্গ হচ্ছে, এমনটাই দাবি করেন রাজ্যপাল। এমনকি এই তথ্য গােপনীয়তার অধিকার ভঙ্গের বিষয়ে তাঁর কাছে অনেকে অভিযােগ করেছেন ইতিমধ্যেই, এমনটাই জানান জগদীপ ধনকড়। শুধু তাই নয়, কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য তিনি রাজ্য প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও আমন্ত্রণ পাননি, জানান রাজ্যপাল।
Advertisement
শনিবার ঠিক কি বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ভারতের সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যক্তির নিজস্ব মতামত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে এই স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলে অভিযােগ তােলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ল্যান্ড ফোন, মােবাইল, হােয়াটসঅ্যাপে আড়ি পাতা হচ্ছে। ব্যক্তিস্বাধীনতায় প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। আর এই তথ্য ফাঁসের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দাবি করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমার কাছে খবর রয়েছে আমার ফোনও ট্যাপ করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের পরই বিষয়টি নিয়ে শােরগােল পড়ে যায়। কিন্তু রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর দাবির পাল্টা রাজ্যপাল জানান, এই রাজ্যেও গােপনীয়তা ভঙ্গের অভিযােগ রয়েছে।
নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে রাজ্য প্রশাসনের দিকে রাজ্যপালের অভিযােগের আঙুল তােলার বিষয়ে রবিবার সবর হন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যপালের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ পার্থবাবু জানান, যে কারণে সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে এই রাজ্যে এসেছেন রাজ্যপাল, সেটা বাদ দিয়ে তিনি অন্য বিষয়ে নাক গলাচ্ছেন। এমনকি রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র হিসাবে কাজ করছে রাজ্যপাল বলে অভিযােগ পার্থবাবুর।
তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কোনও বক্তব্যের পাল্টা যেভাবে রাজ্যপাল প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন, তা বিরােধী দলনেতার কাজ। বিরােধী নেতার জায়গায় রাজ্যপাল সেই কাজ করছেন, জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, এই প্রথমবার নয় লােকসভা নির্বাচনের আগেও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য ফাঁসের অভিযােগ এনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে আসরে নামে বিজেপি নেতৃত্বও। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘােষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর অভিযােগের কোনও প্রমাণ নেই হেরে গিয়ে উল্টোপাল্টা বকছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দাবি দিলীপবাবুর।
শুধু দিলীপ ঘােষ নন, রবিবার এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পাল্টা সরব হন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তিনি অভিযোগ তােলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরােধীদের, এমনকি তৃণমূল নেতৃত্বদের একাংশের ফোন ট্যাপ করেন। ২ বছর ধরে রাজীব কুমারকে দিয়ে ফোন ট্যাপ করিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, এমনটাও অভিযােগ কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
মােটের ওপর কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আড়ি পাতার অভিযােগে সরব সব পক্ষই। পুরাে ঘটনায় পাল্টা রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্যপাল। দিলীপ ঘােষ সহ অন্যান্য বিজেপি নেতৃত্বের কণ্ঠেও একই সুর। এখন দেখার, মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযােগের পরিপ্রেক্ষিতে কি আদৌ কোনও বক্তব্য রাখবেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব?
Advertisement



