সোমবার থেকে রেড জোনের বাইরে চলবে বাস-ট্যাক্সি, খুলবে দোকানপাট

লকডাউনের বাধন খোলা না হলেও কিছুটা আলগা করা হল। ৪ মে থেকে গ্রিন জোনের মধ্যে আন্তঃজেলা বাস-ট্যাক্সি ইত্যাদি পরিবহণ পরিষেবা শর্তসাপেক্ষে চালু করা হবে।

Written by SNS Kolkata | April 30, 2020 6:24 pm

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

লকডাউনের বাধন খোলা না হলেও কিছুটা আলগা করা হল। আগামী সোমবার অথাৎ ৪ মে থেকে গ্রিন জোনের মধ্যে আন্তঃজেলা বাস-ট্যাক্সি ইত্যাদি পরিবহণ পরিষেবা শর্তসাপেক্ষে চালু করা হবে। এইসব অঞ্চলে নতুন করে বেশ কিছু দোকানপাটও খুলবে। বুধবার নবান্নে একথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন অত্যাবশকীয় পণ্য ছাড়া আরও যা কিছু দোকানপাট খোলার ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছ থেকে কিছু জ্ঞাতব্য রয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশিকা না পাওয়া গেলেও বুধবার কোভিড মোকাবিলার ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকে রাজ্য সরকার কিছু সিদ্ধান্ত নেয়। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে ঘোষণা করেন আগামী সোমবার থেকে কী কী দোকান খুলবে। কোন কোন পরিষেবা চালু হবে।

দ্বিতীয় পর্বে লকডাউনের সময়সীমা ৩ মে পর্যন্ত নির্ধারিত করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এরপরই যে লকডাউন উঠবে না, তার পূর্বাভাসও পাওয়া গিয়েছে কেন্দ্রের কাছ থেকে। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন ২১ মে পর্যন্ত সবরকম সাবধানতা জারি থাকবে। সেক্ষেত্রে লকডাউনের আওতা থেকে আরও কিছু পরিষেবাকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বিশেষ করে যাতায়াতের জন্য গণ পরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষের অধীর অপেক্ষা ছিল।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়ে দেন সোমবার থেকে গ্রিন জোনের মধ্যে বাস পরিষেবা চালু করা হবে। তবে এই বাস পরিষেবা কেবলমাত্র আন্তঃজেলা পরিবহণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বাস চলবে না। কুড়ি জনের বেশি যাত্রী বাসে নেওয়া যাবে না। বাসগুলিকে ভালোভাবে স্যানিটাইজ করতে হবে। যাত্রী এবং পরিবহণ কর্মীদের মাস্ক ব্যবহার করা এবং সোস্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রাখতে হবে। অন্যথা হলে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।

গ্রিন এবং অরেঞ্জ জোনের মধ্যে ট্যাক্সি পরিষেবাও চালু করা হবে। তবে ট্যাক্সির সামনে শুধু চালক বসবেন। পেছনে দু’জনের বেশি যাত্রী সওয়ার হতে পারবেন না। এর আগে ট্যাক্সি পরিষেবা কেবল হাসপাতাল কিংবা ডাক্তার দেখানোর ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল।

সোমবার থেকে বেশ কিছু দোকানপাটও খোলার ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হবে। তবে এগুলি গ্রিন এবং অরেঞ্জ। জোনের মধ্যে বলবৎ থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, গ্রিন এবং অরেঞ্জ জোনে যেখানে কাছাকাছি অঞ্চলে একটাই দোকান রয়েছে, সেইসব দোকান খোলা হবে। স্টেশনারি দোকান, বইয়ের দোকান, রঙের দোকান, হার্ডওয়্যারের দোকান, ইলেকট্রনিক সরঞ্জামের ছোট দোকান, মোবাইল ব্যাটারি চার্জিং করার দোকান, লন্ড্রি দোকান খোলা যাবে। চা এবং পান-বিড়ির দোকান খোলা যাবে, কিন্তু সেখানে আড্ডা জমানো যাবে না।

গ্রিন জোন এলাকায় স্টিল, লোহার ইত্যাদির কারখানা চালু করা যাবে। তবে সেখানেও কারখানার ভেতরে শ্রমিকদের সোস্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রাখতে হবে। কেন্দুপাতা কিংবা তালপাতার মতো বনজ সম্পদ বিক্রির কাজ শুরু করা যাবে। মমতা আশ্বাস দেন, জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের এইসব বনজ সম্পদ বিক্রয়ে অসুবিধে হলে সরকার তাদের সামগ্রী কিনে নেবে।

পূর্ত দফতর, সেচ দফতর, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কর্মপরিধির মধ্যে নির্মাণকর্মীদের কাজের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তবে সেখানেও শ্রমিকদের নিজেদের দায়িত্বে থাকার বন্দোবস্ত করতে হবে, সোশ্যাল ডিসটান্সিং মেনে। রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দোকান থেকে ডেলিভারি ম্যানের মাধ্যমে আনা যাবে। এই বিষয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর ইতিমধ্যেই কথা বলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে। মমতা জানান, এই ব্যবস্থা চালু হলে গ্রিন জোনে থাকা মাঝেরহাট ব্রিজ তৈরির কাজ চালু করা যাবে।

তবে কেন্দ্রীয় সরকার সেলুন দোকান চালু করার অনুমতি না দেওয়ায় সেলুন পার্লার ইত্যাদি চালু করা যাবে না। কোনও মার্কেট কমপ্লেক্স খোলা যাবে না। হকার্স কর্নার বা ফুটপাথের দোকান চালু করা যাবে না।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, কনটেইনমেন্ট জোনে পুরো লকডাউন চলবে। অরেঞ্জ জোনে কী চলবে আর কোথায় কোন দোকান খুলবে তা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন দেখে নেবে। তবে গ্রিন জোন যদি অরেঞ্জ বা অরেঞ্জ জোন যদি রেড জোনে পরিণত হয় তাহলে সিদ্ধান্ত বদল হবে।