• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

অমিল পদবি, এসআইআর আতঙ্কে কুমারগঞ্জে আত্মঘাতী বৃদ্ধ

মৃতের নাম ওছমান মণ্ডল (৬৫)। তাঁর বাড়ি কুমারগঞ্জ থানার ডাঙ্গারহাট আগাছা এলাকায়

এসআইআর আতঙ্কে ফের আত্মহত্যা রাজ্যে। ভোটার কার্ড ও ২০০২ সালের তালিকায় আলাদা আলাদা পদবি থাকায় আতঙ্কিত হয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের বৃদ্ধ। মঙ্গলবার বাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।
মৃতের নাম ওছমান মণ্ডল (৬৫)। তাঁর বাড়ি কুমারগঞ্জ থানার ডাঙ্গারহাট আগাছা এলাকায়। পেশায় তিনি কৃষক ছিলেন। তাঁর তিন মেয়ে। তিনজনেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্ত্রীয়ের সঙ্গে বাড়িতে থাকতেন ওছমান। এসআইআর ঘোষণার পর থেকেই তিনি আতঙ্কে ভুগছিলেন।
কারণ ভোটার কার্ডে ওছমান মণ্ডল  থাকলেও ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম লেখা ছিল ওছমান মোল্লা। দুটি জায়গায় পদবি আলাদা আলাদ ছিল। এই নিয়ে ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন ওই বৃদ্ধ। পরিবারের দাবি, সোমবার গভীর রাতে নিজের ঘরে গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি। মঙ্গলবার ঘটনাটি জানাজানি হয়। নামের অমিলের জন্যই এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি পরিবারের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে পদবি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য পঞ্চায়েত অফিস, পার্টি অফিসে ঘোরাফেরা করেছিলেন ওছমান। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বিপ্লব সরকার তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন। ডাঙ্গারহাটা বাজারে গিয়েও তিনি নিজের ভয়ের কথা জানিয়েছিলেন।
তবে এই কারণে তিনি এই চরম সিদ্ধান্ত নেবেন তা কেউই ভাবতে পারেনি। তৃণমূলের তরফে এই ঘটনাকে ‘এসআইআর আতঙ্কের মর্মান্তিক ফল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এসআইআর–এর নামে ষড়যন্ত্র চলছে বলে দাবি করেছেন কুমারগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডল। এই মৃত্যুর জন্য ফের একবার বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছে রাজ্যের শাসকদল। যদিও বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, ২৭ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর–এর দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রাজ্যে প্রতিদিনই এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে। এসআইআর ঘোষণার পর সর্বপ্রথম আত্মঘাতী হন পানিহাটির প্রদীপ কর।
এরপর বীরভূমের ইলামবাজারের ক্ষিতীশ মজুমদার, টিটাগড়ের কাকলি সরকার, হাওড়ার উলুবেড়িয়ার জাহির মাল, মুর্শিদাবাদের কান্দির মোহন শেখ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের সফিউল গাজি, বহরমপুরের তারক সাহা সহ আরও অনেকে আত্মঘাতী হন।
এসআইআর–এর কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় এক বিএলও–রও। সোমবার নদিয়ার তাহেরপুর থানার কালীনারায়ণপুর পাহাড়পুরের কৃষ্ণচকপুর মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা শ্যামল কুমার সাহার মৃত্যু হয়। এসআইআর আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
অন্যদিকে, এসআইআর আতঙ্কে মেয়েকে কীটনাশক খাইয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন হুগলির ধনেখালির আশা সোরেন। সোমবার এসএসকেএম হাসপাতালে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। স্থিতিশীল রয়েছে তাঁর শিশুকন্যা। এই আবহে মঙ্গলবার এসআইআর আতঙ্কে আরও এক জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এল।

Advertisement

Advertisement