• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

তামিলনাড়ুতে দাহে বাধা, শত মাইল দূর থেকে টাকিতে ফিরল পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ

সেই গাড়িতেই কয়েকশো মাইল পথ অতিক্রম করে মৃতদেহ ফিরিয়ে আনা হয় টাকি পুরসভা এলাকায়। বৃহস্পতিবার রাতেই স্থানীয় শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় নীলমণির।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিক। কিন্তু মৃত্যুপরবর্তী সৎকারের ক্ষেত্রেও বাধার মুখে পড়তে হল পরিবারকে। অভিযোগ, বাঙালি হওয়ার কারণেই তামিলনাড়ুর একাধিক শ্মশান থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় ওই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃতদেহ। শেষপর্যন্ত শত শত কিলোমিটার পথ পেরিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে দেহ ফিরিয়ে আনা হল বসিরহাটের টাকি এলাকায়, সেখানে শ্মশানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

মৃত শ্রমিক নীলমণি ঘোষের বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। টাকি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নীলমণি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে তামিলনাড়ুর একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটে ১৯ আগস্ট। কারখানার সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান নীলমণি। সহকর্মীরা দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও চিকিৎসার মাঝপথেই মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরপরই পরিবারের অনুমতি নিয়েই কারখানা কর্তৃপক্ষ ও সহকর্মীরা মৃতদেহ স্থানীয় শ্মশানে নিয়ে যান। কিন্তু অভিযোগ, বাঙালি শুনে শ্মশান কর্তৃপক্ষ দাহে রাজি হয়নি। এরপর একাধিক শ্মশান ঘুরেও একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন তাঁরা।

Advertisement

অবশেষে, পরিবারের সঙ্গে পরামর্শ করে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করা হয়। সেই গাড়িতেই কয়েকশো মাইল পথ অতিক্রম করে মৃতদেহ ফিরিয়ে আনা হয় টাকি পুরসভা এলাকায়। বৃহস্পতিবার রাতেই স্থানীয় শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় নীলমণির।

ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ভিনরাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের উপর এই ধরনের আচরণ অমানবিক। ইতিমধ্যেই রাজ্যের রাজনৈতিক মহলেও এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বাঙালি শ্রমিকদের উপর অত্যাচার, গ্রেপ্তার এবং অপমানের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এবার দাহে বাধার অভিযোগে ফের সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষও। তাঁদের প্রশ্ন— ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাঙালিদের নিরাপত্তা ও সম্মান কীভাবে নিশ্চিত করবে সরকার?

Advertisement