• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য ১ কোটির মাইলফলক

কন্যাশ্রী প্রকল্প

নিজস্ব চিত্র

বুধবার রাজ্যের তরফে ধনধান্য স্টেডিয়ামে পড়ুয়াদের নিয়ে ছাত্র সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা, যেমন স্কলারশিপ, খাতা–বই বিতরণ, কন্যাশ্রী, সবুজ সাথীর সাইকেল ইত্যাদি প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সহ মন্ত্রী ও বিধায়করা। মমতা এদিন দাবি করেন, বাংলায় কাজের কোনও অসুবিধা নেই। তাঁর কথায়, ‘বাংলায় কাজের অসুবিধা নেই। বাইরে পড়তে হলে পড়ো, পড়ে চলে এসো।’

এই মঞ্চ থেকে মমতা জানান, তিনি কন্যাশ্রী প্রকল্পে এক কোটির মাইলফলক ছুঁতে চান। এ ছাড়াও শিক্ষা সংক্রান্ত কোন প্রকল্পে উপভোক্তার সংখ্যা কত, সেই পরিসংখ্যানও দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন ৮৯ লক্ষ ছাত্রী। মমতা জানান, সবুজসাথী প্রকল্পে সাইকেল পেয়েছে এক কোটি ২৭ লক্ষ স্কুলপড়ুয়া। ঐক্যশ্রীর উপভোক্তার সংখ্যা ৪ কোটি ১৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। শিক্ষাশ্রীর সুবিধা পেয়েছে ১ কোটি ৩৯ লক্ষ ছাত্রছাত্রী। মেধাশ্রী প্রকল্পে সরকারি অনুদান প্রাপকের সংখ্যা ৬ লক্ষ ৬৮ হাজার। স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ পেয়েছে ৩২ লক্ষ ৬০ হাজার ছাত্রছাত্রী।

Advertisement

স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণ পেয়েছেন ৮১ হাজার পড়ুয়া। রাজ্যে নতুন করে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়, ১৪টি মেডিক্যাল কলেজ, ৫৩টি কলেজ ও ৭ হাজারের বেশি স্কুল তৈরি হয়েছে। শুধু শিক্ষা সংক্রান্ত প্রকল্পেই রাজ্যে সুবিধা পেয়েছে প্রায় সাত কোটি পড়ুয়া। এই পরিসংখ্যান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বলে মনে করে রাজ্য সরকার। মমতার বক্তব্যে এদিন উঠে আসে ইউক্রেনের যুদ্ধের পরিস্থিতির কথা। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সেখানে আটকে থাকা বাংলার পড়ুয়াদের রাজ্য সাহায্য করেছিল।

Advertisement

মমতা জানান, ইউক্রেনে আটকে থাকা পড়ুয়াদের উদ্ধার করে পড়ানোর ব্যবস্থা করেছে রাজ্য। কিন্তু বাইরে কোথাও কোনও অসুবিধা হলে বাংলায় ফিরে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন মমতা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলার ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত রয়েছেন, এই নিয়ে গর্ববোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, আগে রাজ্যে কয়েকটি মাত্র কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্র ছিল। বর্তমানে বাংলায় ৫০০টি আইটিআই রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উৎকর্ষ বাংলা। এর মাধ্যমে কর্মী নিতে পারে বিভিন্ন সংস্থা। এর মাধ্যমে ৪৭ লক্ষ পড়ুয়া প্রশিক্ষণ পেয়েছে বলে জানানো হয়। পাশাপাশি ১০ লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হয়েছে। চাকরি পেতে চলেছেন আরও অনেক পড়ুয়াই।

মমতার বক্তব্যে এদিন অমর্ত্য সেন, সুগত বসুর কথা উঠে আসে। তাঁর কথায়, ‘সুগত বোস কোথায় পড়ান? হাভার্ড ইউনিভার্সিটিতে। দেশজুড়ে বাংলার এমন অনেক কৃতী ছড়িয়ে রয়েছে। তাই বলছি এগিয়ে যাও, যে কোনও বাধাকে অতিক্রম করো, মনকে কঠিন করে বলো, এটা আমার স্বপ্ন, এটাকে আমি বাস্তবায়িত করব। কারণ, আমি বাংলার মাটিতে জন্মেছি। এ মাটিতে সোনাও ফলে, রুখতে এলে আমি সোজা হয়ে দাঁড়াই। মোকাবিলা করতে পারি। কারণ, এটা বাংলা।’

মমতার মতে, সবসময় শক্ত কথা ভালো লাগে না। মাঝে মধ্যে একটু আনন্দ, উল্লাসও করা উচিত। নিজেদের কাজ ছেড়ে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান মমতা। মমতার বক্তব্যে এদিন উঠে আসে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রসঙ্গও। বুঝিয়ে দেন এআই কাকে বলে। তাঁর মতে, যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য বিষয়গুলির উপরেও জোর দিতে হবে। চিকিৎসকদের পাশাপাশি আইনজীবীদেরও অভাবও রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘জীবনের সম্পদ হল মনুষ্যত্ব ও সুস্বাস্থ্য। এই দুটোর উপর নজর রাখতে হবে। পাশাপাশি মনও ভালো রাখতে হবে।’

Advertisement