‘অতিবৃষ্টিতে বহু মানুষের ঘর ভেঙে গিয়েছে, দ্রুত তাঁদের জন্য নতুন ঘর তৈরি করা হবে,’ বর্ধমানের প্রশাসনিক সভা থেকে এমনই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবার প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে, তার ওপর ডিভিসির জল জেলাগুলোকে প্লাবিত করছে। তবু আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে।’
Advertisement
তিনি আরও নির্দেশ দেন, ‘বর্ষায় যাদের ঘর ভেঙে পড়েছে, সেই তালিকা ডিএমরা দ্রুত মুখ্যসচিবের কাছে পাঠান। তাঁদের জন্য দ্রুত ঘর তৈরি করা হবে। এই প্রকল্প বাংলা আবাস যোজনার আওতায় নয়, আলাদাভাবে করা হবে।’
Advertisement
কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘১০০ দিনের কাজের টাকা, পানীয় জলের প্রকল্প, এমনকি সর্বশিক্ষার টাকাও বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। বাংলার বাড়ি প্রকল্পও আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি—৪৭ লক্ষ মাটির ঘর পুনর্নির্মাণ করেছি, এবছরই ১২ লক্ষ পাকা ঘরের টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। আরও ১৬ লক্ষ পরিবার ডিসেম্বরের মধ্যে ঘর পাবে, বাকিরা জুনে। সব মিলিয়ে প্রায় ৭৫ লক্ষ ঘর তৈরি করা হয়েছে।’
ধান উৎপাদনে বাংলার সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ‘ধান উৎপাদনে সারা দেশে বাংলা প্রথম স্থানে রয়েছে।’
সভার মঞ্চ থেকেই ১৪টি জেলার একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষকে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবার সুবিধা দেওয়া হয়—যার মধ্যে রয়েছে ৭২ হাজার ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ সুবিধাভোগী, ৫০ হাজারের বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং প্রায় ৯ হাজার স্কুলপড়ুয়া।
নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য ‘সাইকেল বিতরণ কর্মসূচি ২০২৫’-এরও সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ‘২০১১ সাল থেকে আট ধাপে রাজ্যে মোট ১ কোটি ৩৮ লক্ষ সাইকেল বিতরণ হয়েছে। এবারে আরও সাড়ে ১২ লক্ষ পড়ুয়ার হাতে সাইকেল তুলে দেওয়া হবে, যার সূচনা হল বর্ধমান থেকে।’
এছাড়া জমির পাট্টা বিতরণের তথ্যও দেন তিনি। ‘২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২ লক্ষ ২৬ হাজার গৃহ পাট্টা, ১ লক্ষ ৮০ হাজার কৃষি পাট্টা এবং ৪৭ হাজার বন পাট্টা দেওয়া হয়েছে,’ জানান মুখ্যমন্ত্রী। এদিন নতুন করে ২৮ হাজার পাট্টা বিতরণ করা হয় এবং আরও ২৪ হাজার পাট্টা দ্রুত দেওয়ার ঘোষণা করা হয়।
Advertisement



