অভিযোগ আপাতত ধোপে টিকল না। কলকাতা পুর নিগমের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গড়া বোর্ডকেই ‘কেয়ারটেকার বোর্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করে তাদেরকে একমাসের জন্য কাজ করার সুযোগ দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে কলকাতা পুরসভার বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ। রাজ্য সরকার কি করবে তা নিয়ে দোলাচল ছিল।
বুধবার অবশ্য নির্দেশ জারি করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে। সেখানে বলা হয়, মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে প্রশাসকমণ্ডলী কলকাতা পুরসভার কাজ চালাবে। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের পর বিরোধী শিবির নড়েচড়ে বসে। শুরু হয় চাপানউতোর। কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও দায়ের হয়। কিন্তু এদিন কলকাতা পুর নিগমের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গড়া বোর্ডকেই ‘কেয়ারটেকার বোর্ড’-এর মান্যতা দিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দিল হাইকোর্ট।
Advertisement
এদিন সন্ধ্যায় বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের বেঞ্চে শুনানি হয়। রাজ্যের তরফে শুনানিতে কেউ ছিল না বলে জানা যাচ্ছে। লকডাউন পরিস্থিতিতে পুর পরিষেবার জরুরি কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই অন্তর্বর্তী নির্দেশ। একমাস পরে বিপর্যয় কমলে ফের এই মামলার শুনানি হবে জানা যাচ্ছে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে শরৎকুমার সিং নামে এক ব্যক্তি হাইকোর্টে মামলা করে দাবি করেন, কলকাতা পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ বেআইনি এবং সংবিধানের পরিপন্থী।
Advertisement
এদিকে, কলকাতা পুরসভার নতুন বোর্ড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের প্রথম বৈঠক আজ, শুত্রবার হওয়ার কথা। সরকারি নির্দেশিকা সেকথাই বলছে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বাধীন এই বোর্ডে আরও ১৩ জন রয়েছেন। ফিরহাদ হাকিমকে চেয়ারপার্সন করা হয়েছে বোর্ডের। এই বোর্ডই ঠিক করবে আগামী দিনে কোন পথে চলবে পুরসভা।
তবে, কলকাতা পুরসভার ১৪৪ জন কাউন্সিলর আজ, শুক্রবার থেকে তাদের ওয়ার্ড অফিসে যান কিনা সেটাই দেখার। যদিও এবিষয়ে কলকাতা পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের আরএসপি কাউন্সিলর দেবাশিস মুখার্জির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নৈতিকভাবে ওয়ার্ড অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করছিনা। কিন্তু মানুষকে পরিষেবা দিতে হবে সেকারণে মোবাইল ফোন এবং প্রয়োজনে ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষের সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হব।
শাসকদলের সিংহভাগ কাউন্সিলর দোলাচলে রয়েছে। তবে, তারা যে কাজের মধ্যেই থাকবেন বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে ওয়ার্ড অফিসে যাওয়া নিয়ে শাসকদলের কাউন্সিলরদের মধ্যে ভিন্ন মত উঠে এসেছে। অনেকে বলছেন খুব শীঘ্রই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে বোর্ড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর। ফলে এক দু’দিন দেখতে দেখতে কেটে যাবে। আবার অনেকে বলছেন, ওয়ার্ড অফিসে গেলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে না।
তবে নতুন বোর্ড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের নতুন গাইডলাইন না আসা পর্যন্ত কাউন্সিলরা প্রয়োজনীয় পরিষেবা বিশেষত শংসাপত্র দিতে পারবেন বলে মনে হয় না। ফলে বোর্ড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের নতুন গাইডলাইনের জন্য তাদের অপেক্ষা করতেই হবে।
৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সেই সঙ্গে আরএসপি’র অন্যতম শীর্ষ নেতা দেবাশিস মুখার্জি বলেন, তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত না নিয়ে অর্ডিন্যান্স এনে কাজ করলে ভালো হত। এর জন্য হয়তো কিছুটা সময় যেত, কিন্তু বিষয়টি অনেক শক্তপোক্ত হত।
রাজ্যপাল যদি সেই সময় অন্য ভূমিকা নিত তাও মানুষের সামনে তুলে ধরা সম্ভব হত। কারণ, এখন যে পরিস্থিতি চলছে তাতে করে সবচেয়ে বেশি কাজ হচ্ছে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের। এছাড়াও আরও অনেক প্রয়োজনীয় কাজকর্ম কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষের রয়েছে। কিন্তু আর একটু বেশি সচেতন হয়ে কাজ করলে ভালো হত।
অন্যদিকে, রাতারাতি মিউনিসিপ্যাল কমিশনারের পদ থেকে সুব্রত গুপ্তকে সরিয়ে দেওয়া নিয়েও গুঞ্জন রয়েছে।
Advertisement



