সম্প্রীতির বড় জায়গা সঙ্গীত। সঙ্গীতের মঞ্চ কোনও বিভাজনে বিশ্বাস করে না। দয়া করে এই পরিবারকে ভাঙতে দেবেন না। বাংলাকে গুজরাত হতে দেব না। মুখ্যমন্ত্রীর এই আবেদনের ভিত্তিতেই বাংলার সংস্কৃতিকে মর্যাদা দিয়ে বুধবার সূচনা হল বাংলা সঙ্গীতমেলার।
সেই মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ঘােষণা করলেন ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের মধ্যে ৬৩০ টি মেলার আয়ােজন করবে রাজ্য সরকার। আর এইসব মেলা আয়ােজিত হলে উপকৃত তবে বাংলার শিল্পীরা। তবে কোভিড বিধির কথা মাথায় রেখে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই চলবে উৎসব, কড়া নির্দেশিকা মুখ্যমন্ত্রীর।
ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে দিল্লি, চেন্নাই এবং কলকাতা নিবন্দরে আসা যাত্রীদের মধ্যে কুড়িজন করােনায় আক্রান্ত রয়েছেন। সেকথার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দূরত্ব বজায় রেখে, মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করে মেলায় অংশ নিতে হবে।
বুধবার প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে স্মরণ করে ‘ও আকাশ সােনা সােনা’ গানটি দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়। উৎসবে মুখ্যমন্ত্রী গানের তালে পা মিলিয়ে নাচতেও দেখা যায়। অনুষ্ঠানে মমতার হাত দিয়েই সঙ্গীত মহাসম্মান ও সঙ্গীত সম্মান তুলে দেওয়া হয় বিশিষ্ট শিল্পীদের।
সঙ্গীত মহাসম্মান পান অসীমা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গীত সম্মানপ্রাপকদের তালিকায় ছিলেন মিনা মুখােপাধ্যায়, পল্লব ঘােষ, ব্ৰহ্মতােষ চট্টোপাধ্যায়, সুজাতা সরকার, কৃষ্ণা মজুমদার, জয়তী চক্রবর্তী, ভগীরথ রায়, সুনীতি রায়, পণ্ডিত শুভেন চ্যাটার্জি, মণিকমল ছেত্রী, মংলা কান্ত রায়, সৌরভ রায়, নূর আলম, মুক্তি বৈরাগ্য, বাসন্তী হেমব্রম, ইমরান খান, নুরজাহান চিত্রকর, শম্পা বিশ্বাস, হীরামণি মাণ্ডি, সন্ধ্যারাণি মাহাতাে, হাড়িরাম কালিন্দী।
সম্মানপ্রাপকরা কেবল কলকাতাই নয়, নদীয়, উত্তরবঙ্গ, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ইত্যাদি বিভিন্ন জেলারও বাসিন্দা।
২৪ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাতদিনের সঙ্গীত মেলা চলবে কলকাতার দশটি মঞ্চে। এগুলি হল মােহরকুঞ্জের মুক্তমঞ্চ, রবীন্দ্রসদন, শিশির মঞ্চ, রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবন, ফণীভূষণ বিদ্যাবিনােদ মঞ্চ, হেদুয়া পার্ক, মধুসুদন মুক্তমঞ্চ, একতারা মুক্তমঞ্চ, বড়িশা ক্লাব ময়দান, দেশপ্রিয় পার্ক।
বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাঁচ হাজার শিল্পীকে ছড়িয়ে দেওয়া হবে এই দশটি মঞ্চে। সেই সঙ্গে ২৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চারুকলা পর্ষদ প্রাঙ্গন সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে এবং পয়লা জানুয়ারি একতারা মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘বিশ্ববাংলা লােকসংস্কৃতি উৎসব’। সঙ্গীতমেলার শেষ দিন নন্দনে একতারা মঞ্চে বাংলা আধুনিক গান এবং সিনেমার গানে লােকসঙ্গীতের প্রভাব নিয়ে একটি আলােচনাসভা হবে। যেখানে বাংলা সঙ্গীত জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেবেন।