ব্যাঙ্কের সামনে লম্বা লাইন। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার হিড়িক। গ্রামের প্রায় প্রত্যেকটি পরিবারই নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন। অবাক কাণ্ড! বীরভূমের ইলামবাজারের বাধপাড়া, নীচুপাড়া-সহ আশেপাশের প্রায় সব গ্রামেই একই চিত্র ধরা পড়েছে।
বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর ঘোষণার পর থেকেই এই সব গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ঘুম উড়েছে সবার। চোখে-মুখে চিন্তা ও উদ্বেগ। নাগরিকত্ব হারানোর ভয় তাড়া করে ফিরছে তাঁদের মনে। যদি ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যায়, দেশছাড়া হতে হয়, তাহলে কী হবে? এই সকল চিন্তা গ্রাস করেছে গ্রামবাসীদের।
Advertisement
কয়েক বছর আগে এনআরসি নিয়ে তৈরি হওয়া আতঙ্ক আবার ফিরে এসেছে। বিশেষ নিবিড় সংশোধনের ফলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ গেলে ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতে হবে না তো, সেই ভয় ঘুরছে সবার মনে। সম্প্রতি বাংলা-সহ ১২টি রাজ্যে এসআইআর ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তারপর থেকেই বাংলার একাধিক জায়গায় ধরা পড়েছে আতঙ্কের ছবি। সেই তালিকায় নাম লিখিয়েছে বীরভূমও। এসআইআর আবহে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলছে ভোটাররা। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত?
Advertisement
এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘এসআইআর নিয়ে খুব ভয় তৈরি হয়েছে। যদি অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেয়, তখন কী হবে? শুনছিলাম, আমাদের নাকি এখান থেকে সরিয়ে দিতে পারে। তাই আগেভাগে টাকাটা তুলে নিয়ে এসেছি। অন্তত না খেয়ে তো মরব না।’
অর্থাৎ এনআরসি-র সময় ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ নিয়ে যে ভয় তৈরি হয়েছিল, তা আবার ফিরে এসেছে এসআইআর-এর হাত ধরে। বীরভূমের তৃণমূল নেতা কাজল শেখ বিজেপিকে দুষে বলেছেন, ‘মানুষকে বলব, আমাদের কাছে আসুন, নিজেদের সমস্যা বলুন। কারওর কথা শুনবেন না। কোনও ফাঁদে পা দেবেন না। এই সব বিজেপির চক্রান্ত।’ অন্যদিকে স্থানীয় গেরুয়া শিবিরের নেতা দীপক দাস বলেছেন, ‘তৃণমূল হারার আতঙ্কে মানুষের মনে ভয় তৈরি করেছে। ক্ষমতা থাকলে এসআইআর বন্ধ করে দেখাক।’
Advertisement



