জেএনইউ’তে হামলা পূর্বপরিকল্পিত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে আক্রমণ মমতার

জেএনইউ’র হামলাকে পূর্বপরিকল্পিত বলেই কপিল মুনি আশ্রম চত্বরে মন্তব্য করেন মমতা। দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তােলেন তিনি।

Written by Madhuchanda Chakraborty Kolkata | January 7, 2020 3:42 pm

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

সােমবার কলকাতার রাস্তায় যখন জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটিতে হামলা নিয়ে প্রতিবাদী মিছিল হচ্ছে তৃণমূলের তরফে, তখন সাগরদ্বীপে গিয়ে এই ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানালেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এই হামলাকে পূর্বপরিকল্পিত বলেই কপিল মুনি আশ্রম চত্বরে মন্তব্য করেন মমতা। দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তােলেন তিনি। বলেন, দিল্লির পুলিশবাহিনী কেজরিওয়ালের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অঙ্গুলিহেলনে দিল্লির পুলিশবাহিনী যেভাবে জেএনইউ’এর ছাত্রছাত্রী এমনকী অধ্যাপিকাদের ওপর নৃশংসভাবে আক্রমণ চালিয়েছে তা ‘ফ্যাসিস্ট সার্জিকাল স্ট্রাইক’ বলে মনে করছেন মমতা। তাঁর মতে এই ঘটনায় বহিরাগতরাও যুক্ত রয়েছেন।

শুধু ছাত্রদের ওপর হামলাই নয়, উত্তরপ্রদেশে যেভাবে সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ চলছে, সেই ইস্যুতে মােদি এবং অমিত শাহ’র ওপর ক্ষোভ উগরে দেন কপিল মুনি আশ্রমের মােহান্ত জ্ঞানদাসজিও, যা মমতার রাজনৈতিক পথকেই সমর্থন করে।

জেএনইউতে হামলার ঘটনার নিন্দা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেছিলেন রবিবার রাতেই। সােমবার কাকদ্বীপ ও সাগর যাওয়ার আগে ডুমুরজলা হেলিপ্যাডে সাংবাদিকদের মুখােমুখি হয়ে তিনি বলেন, বেছে বেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে। এটা বিপজ্জনক। সিএএ, এনআরসি নিয়ে যারাই প্রতিবাদ করছে, তাদেরই কণ্ঠরােধ করা হচ্ছে। সােমবার সাগরে গিয়েও মমতা ঘােষণা করেন, তিনি ছাত্রদের পাশে রয়েছেন। ছাত্রদের তিনি ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ওয়ার্ক টুগেদার, স্পিক টুগেদার, ফাইট টুগেদার’। সব পড়ুয়াদের তিনি ঐক্যবদ্ধ হয়ে, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেছেন।

জেএনইউ হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে তৃণমুলের তরফে দীনেশ ত্রিবেদী, বিবেক গুপ্তা, সাজেদা আহমেদ, মানস ভুইয়াকে পাঠানাে হয়েছে বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তৃণমূলের আন্দোলনকে জোরদার করতে এই ইস্যুতে জেএনইউ ছাত্রদের বিজেপি বিরােধী হাওয়াকে কাজে লাগাতে চাইছেন মমতা। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে মােদির রাজনীতির বিরুদ্ধেও এদিন কপিল মুনি আশ্রমের মূল মােহান্ত জ্ঞানদাসজিকে পাশে পেলেন তিনি। মােহান্ত জ্ঞানদাসজি এদিন স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, মােদি সরকার ‘ভেদ কী রাজনীতি’, নয় ‘ছেদ কী রাজনীতি করছে’। এমনকী অযােধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কৃতিত্বও মােদিকে না দিয়ে, সুপ্রিম কোর্টকেই দিলেন মােহান্তজি। সেই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সময়েই যে সাগরদ্বীপে নানান উন্নয়নের জোয়ার এসেছে সে কথাও জানালেন মােহান্তজি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এদিন বলেন, বাম সরকার তীর্থযাত্রীদের কাছ থেকে কর আদায় করত। অথচ মেলার তীর্থযাত্রীদের কথা ভেবে কোনও কাজ করেনি। এদিন আগামী ৮ জানুয়ারি বাম-কংগ্রেস ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনের ডাকা বনধ যে বাংলায় হতে দেবেন না, সেকথা সাফ জানিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, বনধ’এর ইস্যুকে সমর্থন করলেও বনধকে সমর্থন করছি না। এমনিতেই সারা দেশে অর্থনৈতিক বিপর্যয় চলছে। সেই সময় কর্মনাশা বনধ ডেকে মানুষের ক্ষতি যাতে না হয়, সেটা দেখতে হবে। বনধকে ‘সস্তার রাজনীতি’ বলেও মন্তব্য করেন মমতা।