অভিনেত্রী দেবলীনা দত্তকে গণধর্ষণ ও খুনের হুমকি

গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে একটি শাে’তে মতামত দেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত। এই ঘটনার পর খুন আর গণধর্ষণের হুমকি পেতে শুরু করেন বলে অভিযােগ।

Written by SNS Kolkata | January 19, 2021 4:17 pm

দেবলীনা দত্ত (Photo: SNS)

গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে একটি শাে’তে মতামত দেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত। এই ঘটনার পর খুন আর গণধর্ষণের হুমকি পেতে শুরু করেন বলে অভিযােগ। হুমকি লেখা ওই সমস্ত স্ক্রিনশট নিয়ে যাদবপুর থানায় সােমবার বিকেলে এফআইআর করেন অভিনেত্রী। হুমকিতে বাদ পড়েনি তার বৃদ্ধা মাও।

প্রসঙ্গত, টিভিতে একটি টক শাে’তে দেবলীনা বিজেপি নেতা দিলীপ ঘােষকে প্রশ্ন করার সময় গায়ক ও পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের কথার সূত্র ধরে জানান, নিরামিষভােজী হলেও প্রয়ােজন হলে তার বাড়িতে গিয়ে নবমীর দিন দেবলীনা গরুর মাংস রান্না করে দিতে পারেন।

তিনি মনে করেন, খাদ্য, খাদ্যাভ্যাস এবং ধর্ম বিষয়ে তিনি এতটাই ছুঁৎমার্গহীন। এরপরই সােশ্যাল মিডিয়ায় অশ্লীল আক্রমণ শুরু হয়ে যায়। দেবলীনা এ বিষয়ে বলেন, এখন দেখছি এটাই রেওয়াজ। কোনও মহিলা অন্য স্বরে কথা বললেই তাকে গণধর্ষণ আর গলা কেটে দেওয়ার হুমকি দেওয়া যায়?

বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, গায়ক বাবুল সুপ্রিয় এক ইন্টারভিউতে বলেছিলেন, তিনি কলেজ লাইফে বহুবার বিফ বা গরুর মাংস খেয়েছে, তা নিয়ে কিন্তু কোনও প্রশ্ন করা হয়নি যে উনি কেন গো-মাংস খেলেন? অথচ সেই বিজেপি কর্মী পেশায় উকিল তরুণজ্যোতি তিওয়ারি আমাকে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শুধু হুমকিই নয়, আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেন।

তিনি কেমন উকিল যার পােস্টের তলায় একজন মহিলা ও তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হচ্ছে আর তিনি চুপ। পরিচালক, গায়ক, সুরকার অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে এই নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘কোনও রাজনীতি থেকে নয়, একজন নাগরিক হিসেবে আমি আমার কথা বলেছিলাম।

তা নিয়ে সােশ্যাল মিডিয়ায় যা লেখা হচ্ছে, ভাবতেই পারিনি। ভােট আসছে তার আগে অনেক বিষয় নিয়ে কথা হয়। এই যে মানুষ কমেন্ট করছেন তাদেরও স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে মত প্রকাশের অধিকার আছে। তবে এই যে মানুষ। ধরে নিয়েছেন আমি রাজনীতির জায়গা থেকেই বলছি। এই ধরে নেওয়াটা ভয়ঙ্কর। প্রশ্ন তুলে বলেন, মানুষের ওঠা, বসা, খাওয়া সব বিষয়কে ধর্ম দিয়ে কেন দেখা হবে?

দেবলীনা বললেন, ‘যে বাড়িতে আমি আর তথাগত থাকি, সে বাড়িতে ইদের দিন এবং সাধারণ অন্য যে কোনও দিন শুয়াের রান্না হয়েছে বা বাইরে থেকে আনানো হয়েছে। আমার মুসলিম বন্ধু ও সহকর্মীরা সানন্দে তা খেয়েছেন, কোনও আলােচনা ছাড়াই। কারণ, কাজ বা আডডা দুটোর সময়েই কী খাচ্ছি মুরগি না ছাগল, গরু না শুয়াের সেটা নিয়ে আলােচনা অবান্তর। যদিও হিন্দু ধর্ম মতে শুয়াের। অর্থাৎ বরাহ স্বয়ং বিষ্ণুর অবতার, তবুও শুয়ােরের মাংস খাওয়ার বিরােধিতা কেউ করেননি। আমরাও করিনি, কারণ আমরা খাওয়ার জন্য বাঁচি না বাচার জন্য খাই।