করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একলাফে বাড়ল ৫৪, মৃত ১২

রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গত চব্বিশ ঘন্টায় একলাফে বাড়ল ৫৪ জন, সুস্থ হয়ে ছাড়া পেয়েছেন ৭ জন। সোমবার পর্যন্ত মোট অ্যাক্টিভ করোনা রোগির সংখ্যা ২৪৫, মৃতের সংখ্যা ১২।

Written by SNS Kolkata | April 21, 2020 5:41 pm

প্রতিকি ছবি (File Photo: IANS)

রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গত চব্বিশ ঘন্টায় একলাফে বাড়ল ৫৪ জন, সুস্থ হয়ে ছাড়া পেয়েছেন ৭ জন। সোমবার পর্যন্ত মোট অ্যাক্টিভ করোনা রোগির সংখ্যা ২৪৫, মৃতের সংখ্যা ১২। এ পর্যন্ত ৫৪৬৯ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে এই পরিসংখ্যান দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা।

করোনার থাবায় উদ্বেগ বাড়ছে রাজ্যের। এই পরিস্থিতি আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। সোমবার মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানান, যে সমস্ত এলাকায় সংক্রমণের সংখ্যা বেশি তথা হটস্পট সেখানে মানুষের বাড়ি থেকে বেরনোয় আরও লাগাম টানা হচ্ছে। হটস্পট বা কনফাইনমেন্ট এলাকায় প্রয়োজন পড়লে বাজার পুরো বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। খোলা থাকলেও একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি যেতে দেওয়া হবে না।

রাজ্য সরকারের সুফল বাংলা স্টলের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। যেখানে থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অত্যাবশকীয় পণ্য কেনা যাবে। দুপুর বারোটার পরেই ঝাপ বন্ধ করা হবে ফুল এবং মিষ্টির দোকানের। কনফাইনমেন্ট বা হটস্পট এলাকায় রাস্তায় ব্যারিকেড বাড়ানো হবে।

মুখ্যসচিব বলেন, লকডাউন মানতে শুধু প্রশাসনিক উদ্যোগই যথেষ্ট নয়, জনতাকেও সুশৃঙ্খল হতে হবে। লকডাউনের মধ্যে ছোট-বড় শিল্প সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগ মিলিয়ে মোট ১৫০০ সংস্থা খোলার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিল। রাজ্য সরকার জানিয়ে দেন হটস্পট বা যেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে, সেখানে কোনও সংস্থাকেই খোলার অনুমতি দেওয়া যাবে না। তবে ব্যাঙ্ক খোলার বিষয়ে রাজ্য সরকার কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। লকডাউনের শর্ত মেনে ৩০০’টি সংস্থাকে খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যসচিব।

এদিকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পর কলকাতা ও হাওড়ায় সোমবার থেকে র‍্যাপিড টেস্ট শুরু করা হয়েছে আইসিএমআর-এর নির্দেশিকা মেনে। তবে শুধু হটস্পট বলে বিবেচিত অঞ্চলই নয়, রাজ্যের যে অঞ্চলে কোনও সংক্রমণের খবর নেই, সেখানেও র‍্যাপিড টেস্ট করা হবে।

মুখ্যসচিব জানান, শনিবার পর্যন্ত রাজ্যের দশটি জেলাতে একজনেরও সংক্রমণের খবর ছিল না। রবিবার পূর্ব বর্ধমানে একজনের সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। মুখ্যসচিব জানিয়ে দেন, ‘সন্ধানে’ অ্যাপের মাধ্যমে আশাকর্মীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে রাজ্য সরকার কাদের কী ধরনের রোগের উপসর্গ আছে তা জানতে পারছে। সেই অনুযায়ী র‍্যাপিড টেস্ট নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে।

রাজ্যের কোভিড হাসপাতালগুলিকে দুভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যারা করোনায় আক্রান্ত তাদের কোভিড-১ এ চিকিৎসা হচ্ছে। আবার অনেকে সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস (সারি) নিয়ে এলে তাদের কোভিড-২ তে চিকিৎসা হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালগুলিতে ফিভার ক্লিনিক চালু রয়েছে। যে সব চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী করোনা চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত তাদেরকে পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস ইত্যাদি প্রতিরোধক ব্যবস্থা নিতে বলেন মুখ্যসচিব।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার পিপিই, ২ লক্ষ ৪০ হাজার এন নাইন্টি ফাইভ মাস্ক, ১৭ লক্ষ টু অ্যান্ড থ্রি লেয়ার মাস্ক, ৭ লক্ষ ৯০ হাজার গ্লাভস, ৮৬ হাজার লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৫ হাজার থার্মাল গান দেওয়া হয়েছে।

বেলেঘাটার নাইসেডে করোনা কিটগুলি ত্রুটিযুক্ত কিনা এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যসচিব বলেন, আগে রাজ্যে সরাসরি পুণে থেকে কিট আসত। এখন বেলেঘাটার নাইসেড এগুলি পাঠায়। কিন্তু নাইসেডের বেশ কিছু কিট দিয়ে করোনা পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে এম আর বাঙুরে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ফলে করোনা টেস্টে অনাবশ্যক দেরি হচ্ছে বলে জানান মুখ্যসচিব। তবে সোমবার মালদহের নতুন করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রে যে ৫৭’টি পরীক্ষা হয়েছে তার সবগুলিই নেগেটিভ এসেছে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যসচিব।