জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন মাদারিহাট এলাকায় হাতির হানার দুটি পৃথক ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। মৃতদের মধ্যে একজন শিশু ও একজন মহিলা। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় মাদারিহাট মধ্য ছেকামারী এলাকার বাসিন্দা ভুটভুটি চালক কাদের আলি বাড়িতে ফিরছিলেন। সেই সময় হঠাৎ তিনি একটি মাকনা হাতির সামনে পড়ে যান। হাতিটি তাঁর উপর হামলা চালায়। এই ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হন কাদের। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে মাদারিহাট গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। তবে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় হাসপাতালে এসে নর্থ খয়েরবাড়ির বিট অফিসার বিধান চন্দ্র দে বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন উত্তেজিত জনতা। তাঁর বিরুদ্ধে নিজের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন না করার অভিযোগ উঠেছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, নর্থ খয়েরবাড়ি ফরেস্ট থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরেই তাঁদের গ্রাম। কিন্তু সেখানে যাতায়াতের কোনও ভালো রাস্তা নেই। নেই কোনও সোলার লাইট ও সুরক্ষা ব্যবস্থা। এর জেরে আরও বেশি হাতির হামলা হয়। মাদারিহাট রেঞ্জের রেঞ্জার শুভাশিস রায় জানিয়েছেন, কাদের আলির পরিবারের একজন সরকারি চাকরি ও ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য পাবেন।
অন্যদিকে, মধ্য খয়েরবাড়ি এলাকায় বুধবার গভীর রাতে দেড় বছরের মেয়ে লক্ষ্মী মুন্ডাকে কোলে নিয়ে বাড়ির উঠোনে বসেছিলেন সোনিয়া মুন্ডা। সেই সময় আচমকা মাকনা হাতি হামলা চালায়। হাতিটি মা ও শিশুকে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারে। এই ঘটনায় দুই জনেরই মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
উল্লেখ্য, হাতির হানায় উত্তরবঙ্গে নিয়মিত মৃত্যু ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে চলেছে। খাবারের সন্ধানে প্রায় প্রত্যেকদিনই গ্রামগুলিতে চলে আসে হাতির দল। ভেঙে দেয় বাড়িঘর। এর জেরে প্রতিদিন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাতে হয় বাসিন্দাদের। বহুবার বনদপ্তরকে জানানো হলেও কোনও লাভ হয় না। বুধবার হাতির হানায় ৩ জনের মৃত্যুর খবরে আরও বেশি করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়।
Advertisement