• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

নাবালিকাকে ধর্ষণ করে নির্মমভাবে খুন, ফাঁসির আদেশ শিলিগুড়ি আদালতের

ওই লোকটির (দোষী) দু'জন স্ত্রী এবং সন্তান রয়েছেন। তার পরেও এমন কাজ! ওর ফাঁসিই হওয়া উচিত। প্রথম থেকেই মাটিগাড়া থানা এবং আদালতের উপর আমাদের ভরসা ছিল। সেই ভরসাই আমার মেয়েকে আজ বিচার পাইয়ে দিল।

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

আরজি কর হাসপাতালে নারকীয় ঘটনায় যখন বাংলা উত্তাল, তখন উত্তরবঙ্গের এক নিম্ন আদালতে ধর্ষণ – খুনের মামলায় ফাঁসির সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক। দার্জিলিং জেলার মাটিগাড়ায় স্কুলের ছাত্রীকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় বড় সাজা দিল আদালত। গত বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত মহম্মদ আব্বাসকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। শনিবার আসামিকে ফাঁসির সাজা শোনানো হল। এদিন শিলিগুড়ি আদালতের অতিরিক্ত নগর দায়রা আদালতের বিচারক অনিতা মেহেত্রা মাথুর এই সাজা ঘোষণা করেছেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট মাটিগাড়ায় জঙ্গলের ভিতর একটি পরিত্যক্ত ঘরে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছিল মহম্মদ আব্বাস নামে এক ব্যক্তি। শারীরিক অত্যাচারের জেরে মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার।

নির্যাতিতাকে যাতে চেনা না যায়, সে জন্য ইঁট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়েছিল মেয়েটির মুখ। ওই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। অবশেষে সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে আব্বাসকে দোষী সাব্যস্ত করল শিলিগুড়ি আদালত। আদালত সূত্রে প্রকাশ, গত শুক্রবার সাজা শোনানোর কথা ছিল। সরকারি পক্ষের আইনজীবী উদাহরণ হিসাবে বিভিন্ন ঘটনার নজির তুলে ধরে অপরাধীর ফাঁসির পক্ষে সওয়াল করেন। অন্য দিকে, অপরাধীর আইনজীবী জানান, -‘ তাঁর মক্কেলের বাড়িতে বৃদ্ধা মা রয়েছেন’।

Advertisement

তাঁর পরিবারের কথা ভেবে ফাঁসি রদের আবেদন জানান। আব্বাসের বিরুদ্ধে ওঠা স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হয় গত বৃহস্পতিবারই। সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন,’ঘটনার ১ বছর ১৪ দিনের মাথায় মামলার নিষ্পত্তি হল। খুব গুরুত্ব সহকারে প্রতিটি হাজিরায় আদালতে বোঝাবার চেষ্টা করেছি যে, এটি অন্যান্য মামলার তুলনায় ভিন্ন একটি মামলা। এই মামলায় দোষীর ফাঁসি হওয়া উচিত। আমরা ফাঁসির আবেদন জানিয়েছিলাম। আদালত মূলত দুটি বিষয়ের উপর নজর দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিল। প্রথমত খুন এবং দ্বিতীয়ত নাবালিকাকে ধর্ষণ। পক্সো আইনে মামলা হয়েছিল। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি মৃতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।’

Advertisement

শনিবার সাজা শোনার জন্য মৃতার পরিবার এবং প্রতিবেশীরাও আদালতে হাজির হয়েছিলেন। অপরাধীকে পুলিশ আদালতে নিয়ে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। সাজা ঘোষণার পরে নির্যাতিতার মা বলেন, ‘আদালতের এই রায়ে আমরা খুশি। আমার মেয়ে শান্তি পাবে।’ তিনি আরও বলেন,’ওই লোকটির (দোষী) দু’জন স্ত্রী এবং সন্তান রয়েছেন। তার পরেও এমন কাজ! ওর ফাঁসিই হওয়া উচিত। প্রথম থেকেই মাটিগাড়া থানা এবং আদালতের উপর আমাদের ভরসা ছিল। সেই ভরসাই আমার মেয়েকে আজ বিচার পাইয়ে দিল।’

Advertisement