রাত দুটোয় ডিউটি শেষ করে বন্ধুদের সঙ্গে করেছিলেন খাওয়া-দাওয়া। তারপর গিয়েছিলেন সেমিনার হলে বিশ্রামের জন্য। শুক্রবার সকালে আরজিকর হাসপাতালের ওই সেমিনার হল থেকেই উদ্ধার হল ডাক্তারি পড়ুয়ার মৃতদেহ। বছর একত্রিশের ওই মহিলার মৃত্যু ঠিক কীভাবে, তা নিয়ে ক্রমেই ঘনাচ্ছে রহস্য।
সূত্রের খবর, আরজিকর হাসপাতালের স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ছিলেন তরুণী। কাজ করতেন চেস্ট বিভাগে। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতেও ডিউটি শেষ করেছিলেন অন্যান্য সঙ্গীদের সঙ্গে। তারপর বিশ্রামের জন্য গিয়েছিলেন সেমিনার হলে। শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ সেই সেমিনার হল থেকেই মহিলার অর্ধনগ্ন দেহ দেখতে পায় হাসপাতালের কর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মহিলার নিম্নাঙ্গে কোনও বস্ত্র ছিল না। পাশেই খোলা ছিল ল্যাপটপ। খবর দেওয়া হয় থানায়।
Advertisement
তবে দেহ উদ্ধার করতে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুলিশ প্রশাসনকে। পড়ুয়াদের অভিযোগ, মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। সেই প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ। বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন। মহিলার মৃত্যু কীভাবে? ঘটনার তদন্ত এবং দোষীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। তবে ইমারজেন্সি ওয়ার্ড খোলা রেখেই চলে বিক্ষোভ। দীর্ঘক্ষণ পুলিশ প্রশাসনকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর পর বিকেল পাঁচটা নাগাদ সেমিনার হল থেকে বের করে নিয়ে আসা হয় তরুণীর মৃতদেহ।
Advertisement
আরজিকরে মহিলার মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কলকাতার নগরপাল বিনীত কুমার গোয়েল, অতিরিক্ত নগরপাল মুরলিধর শর্মা। পাশাপাশি, স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। অন্যদিকে, ঘটনাস্থলে যায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও। ফরেনসিক বিভাগের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, তরুণীর ঠোঁটে, গালে এবং গলায় মিলেছে ক্ষত চিহ্নও। ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে নগরপাল বিনীত কুমার গোয়েল বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে”।
এদিন মহিলার পরিবারকে ফোন করে শোক প্রকাশ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “পুলিশের ওপর ভরসা রাখুন। খুবই দুঃখজনক ঘটনা।” তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার কথাও বলেন তিনি। এদিন মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পরিবারের লোকজন। মহিলার মায়ের দাবি, তাঁদের মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তবে লালবাজার সূত্রে খবর , এদিন সন্ধ্যে পর্যন্ত পরিবারের তরফ থেকে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।
Advertisement



