নিউ দিল্লি: অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে চাঁদ। ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে পৃথিবী থেকে। প্রতিবছর গড়ে ৩.৮ সেন্টিমিটার করে দূরে সরে যাচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ। আর চাঁদ দূরে গেলে পৃথিবীর নিজের অক্ষরেখার ওপর ঘূর্ণনের গতিও কমে যাবে। ধীরে ধীরে ঘোরার ফলে বাড়বে দিনের দৈর্ঘ্য। আগামীতে পৃথিবীতে দিনের দৈর্ঘ্য বেড়ে হবে ২৫ ঘন্টা। সম্প্রতি গবেষণায় এমনই তথ্য দিয়েছেন আমেরিকার উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা।
কিন্তু পৃথিবীর ওপর চাঁদের এই অনভিপ্রেত অভিমানের কারণ কী? এবিষয়ে মহাকাশের বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে উইসকনসিন-ম্যাডিসন ইউনিভার্সিটির ভূ-বিজ্ঞানের অধ্যাপক স্টিফেন মায়ার্স জানিয়েছেন, পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে মহাকর্ষীয় বলের কারণেই দূরে সরে যাচ্ছে একমাত্র উপগ্রহ। তার জেরে দিনের সময়সীমা বেড়ে ২৫ ঘণ্টায় গিয়ে দাঁড়াবে।
Advertisement
তিনি আরও জানিয়েছেন, চাঁদ দূরে সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী অনেকটা ঘূর্ণায়মান স্কেটারের মতো আচরণ করবে। ঘূর্ণায়মান স্কেটাররা যেমন দুই হাত প্রসারিত করলে তাদের গতি কমে আসে, সেই রকমই চাঁদ সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর ঘোরার গতি কমবে। তার ফলে দিনের দৈর্ঘ্য বাড়বে।
Advertisement
এবিষয়ে অভিকর্ষ, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সহ পৃথিবী ও মহাকাশের বিভিন্ন বিষয় ছাড়াও ঐতিহাসিক ও ভূতাত্ত্বিক গঠন সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এবিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার জন্য অতীতের বিস্তারিত তথ্য বিশ্লেষণ করতে স্ট্রোক্রোনোলজিরও সাহায্য নিতে চলেছেন বিজ্ঞানীরা।
এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বিজ্ঞানী থেকে সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাহলে কী দিন-রাতের হিসেবে পরিবর্তন আসতে চলেছে? বদলে যাবে সময়ের সমস্ত হিসেব-নিকেশ? তাহলে ঘড়ি চলবে কোন নিয়মে? যদিও গবেষকরা এই সব দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করেছেন। কারণ, সেই সময় আসার এখনও অনেক দেরি আছে। এখনও ২০ কোটি বছর অপেক্ষা করতে হবে পৃথিবীর ২৫ ঘণ্টায় দিন দেখতে গেলে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আজ থেকে ১৪০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে ১৮ ঘণ্টায় দিন হত।
Advertisement



