• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

লক্ষ্য বড়,পূরণ হবে কি?

নরেন্দ্র মােদির দ্বিতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্নে বড় বড় লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হচ্ছে,কিন্তু তা পূরণের আশা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না।

নির্মলা সীতারমণ

পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের লিগে লাফ দেওয়ার জন্য প্রয়ােজনীয় টেকনােলজি, পরিসংখ্যানের ক্ষমতা ও কৃত্রিম গােয়েন্দা তথ্য সম্ভবত ভারতের হাতে আছে।কিন্তু নির্মলা সীতারমনের প্রথম বাজেটে সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়ােজনীয় অর্থ ও কাঠামােমুলক ব্যবস্থার কোনও সংস্থান দেখা যায়নি।শুধুমাত্র লক্ষ্যের কথা না বলে তিনি কীভাবে মজবুত দেশ ও মজবুত নাগরিক উপহার দেবেন তা জানালে বরং সেটা আশ্বাসজনক হত।তার জায়গায় সীতারমন পরিবেশের পরিবর্তন,ইলেকট্রিক যান,মহিলা,শিক্ষা,যুবসমাজ,ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সমস্যা দূর করা ইত্যাদি বিষয় নিয়েই সঠিকভাবে হইচই করেছেন।কিন্তু খরা,বেকারত্ব,উৎপাদন মন্দা,ক্ষুদ্র শিল্পের হতাশা, কৃষিক্ষেত্রের সমস্যা,বাণিজ্য ঘাটতি ও আর্থিক ঘাটতির মত বাস্তব অবস্থা মােকাবিলার কোনও দিশা দেখা যায়নি।সীতারমন অবশ্য আগেই চ্যালেঞ্জ মােকাবিলার কৌশল এই বলে সাফ করে দিয়েছিলেন,যে বিমুদ্রাকরণ ভারতের অর্থনীতিতে কোনও ছাপ ফেলেনি।শুক্রবার লোকসভায় তিনি নতুন ভারতের ‘হিরাে’ হিসাবে বেসরকারি ক্ষেত্রকেই বেছে নেন।তারাই দেশকে অর্থনেতিক সংকট থেকে বার করে তিন ট্রিলিয়ন অর্থনীতি অর্জনের পথে নিয়ে যাবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।বেসরকারি ক্ষেত্রই বড় চাকরিদাতা হিসাবে আবির্ভূত হবে বলে তাঁর আশা।প্রশ্নটা হল চাপে থাকা অর্থনীতি কি বিপর্যস্ত অবস্থা কাটিয়ে উঠে অর্থমন্ত্রীর নতুন সব ঘােষণায় সাড়া দিতে পারবে?বিশেষ করে নতুন সম্পদ কীভাবে সংগৃহীত হবে এবং বড় বিনিয়ােগ কোথা থেকে আসবে তারই যখন কোনও ঠিকঠিকানা নেই। যেটা স্বাগত জানানাের বিষয় তা হল সমস্যা মােকাবিলার জন্য ব্যাংক ও নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য পুঁজির সংস্থান।এতে উন্নতির একটা জোয়ার আসবে বলা হচ্ছে।

উন্নয়নের দু’টি পথ ভারতের এক মৌলিক সমস্যা।একটি পথ ১০০ কোটি মানুষের জন্য(যার মধ্যে ৩০ কোটি মানুষ রয়েছে দারিদ্রসীমার নীচে)।আর আরেকটি পথ ২০ কোটি অবস্থাপন্নদের জন্য।সমাজার্থিক বৈষম্যের মত সমস্যা মোকাবিলার জন্য বেসরকারি ক্ষেত্র প্রস্তুত নয়,কারণ এটাই তার দায় নয়।অন্যান্য যে ক্ষেত্রকে মন্ত্রী আকর্ষণ করতে চেয়েছেন তারা হল অনাবাসী ভারতীয়রা এবং প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়ােগকারীরা,যারা বিমা,বিমান পরিবহণ,মহাকাশ প্রযুক্তি বাজারজাতকরণ, সংবাদমাধ্যম ও অ্যানিমেশনের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করতে পারবেন।অনাবাসী ভারতীয়রা দেশে ফিরলেই আধার কার্ডের সুবিধা পাবেন বলে ঘােষণা করা হয়েছে। বার্ষিক ৪০০ কোটি টাকা টার্নওভার পর্যন্ত সমস্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে করের সীমা ২৫ শতাংশ হওয়ায় কর্পোরেট জগতের সন্তুষ্ট হওয়া উচিত।আয়করে চিরাচরিত ছাড় ও অন্যান্য পুনর্বিন্যাসের পদক্ষেপ অবশ্যই স্বাগত।আয়কর তার রিটার্নের ক্ষেত্রে প্যান না থাকলে আধার কার্ডেও কাজ চলবে বলে যে ঘােষণা করা হয়েছে তাকেও সাধুবাদ জানানাে উচিত।নরেন্দ্র মােদির দ্বিতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্নে বড় বড় লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হচ্ছে,কিন্তু তা পূরণের আশা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না।

Advertisement

Advertisement

Advertisement