দিল্লি, ১৭ নভেম্বর– নোটবন্দি ভুলে গেছেন এমন ভারতীয় খুঁজে পাওয়া মুশকিল। হঠাৎই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে যেন বাজে ভেঙে পড়েছিল সাধারণ মানুষের মাথায়। ব্যাংক-এটিএমের সামনে মানুষের লম্বা লাইন কি কেউ ভুলতে পারে। অবশ্য এই মুদ্রাকরণ নিয়ে কম বিতর্কের সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু তবুও নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছে মোদি সরকার। বিতর্ক গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সেখানেও আগের অবস্থানেই অনড় কেন্দ্রীয় সরকার । বিরোধী দল এবং আর্থিক বিশেষজ্ঞরা যাই বলুন, ছয় বছর পরও কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থানের বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর রাতে দেশে পাঁচশো ও এক হাজার টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । দাবি করেছিলেন, এর ফলে জাল ও কালো টাকার লেনদেন বন্ধ হবে দেশে। বাড়বে আর্থিক কর্মকাণ্ড। ফিরবে লেনদেনে গতি ও স্বচ্ছতা। যদিও নানা সমীক্ষায় উঠে আসা পরিসংখ্যান ভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছে। ব্যবসা মার খেয়েছে লাখ লাখ ছোট ব্যাবসায়ীর। আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন বহু মানুষ।
Advertisement
সরকারের সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন আদালতে মামলা হয়েছিল। আদালতে সরকারের বক্তব্য ছিল, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত সরকারের নীতিগত অবস্থান। এই বিষয়ে আদালত কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
Advertisement
গতকাল থেকে সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয়েছে মামলাগুলির শুনানি। সর্বোচ্চ আদালত বিভিন্ন আদালতে হওয়া মামলাগুলি একত্রিত করে শুনানির ব্যবস্থা করেছে। তার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অর্থ দফতরের এক উপসচিব হলফনামা পেশ করেছেন।
তাতে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের তরফে ফের দাবি করা হয় হয়েছে, বিমুদ্রাকরণ নিয়ে আদালতের বিচার্য বিষয় হতে পারে না। এটা পুরোপুরি সরকারের এক্তিয়ারের বিষয়। যদিও সুপ্রিম কোর্ট আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই বক্তব্য খারিজ করে দিয়েছিল।
হলফনামায় কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, বিমুদ্রাকরণের ফলে বাজারে জাল টাকার লেনদেন অনেক কমেছে। কারণ টাকা জাল করা এখন আর সহজ নয়। কালো টাকার লেনদেন কমেছে। কারণ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বৈধ লেনদেন কয়েক গুন বেড়ে গিয়েছে। বেড়েছে ডিজিটাল লেনদেন। বিমুদ্রাকরণের ফলে ব্যাঙ্কে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়েছে। বেড়েছে আয়কর রিটার্ন জমা করার প্রবণতা। তার ফলে বেড়েছে আয়কর বাবদ আয়।
Advertisement



