• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

উঁচু জাতের ধর্ষক-খুনিদের বাঁচাতে মহাপঞ্চায়েত

উত্তরপ্রদেশের ঠাকুর সমাজ এখন ভিতরে ভিতরে একজোট হয়ে অভিযুক্তদের বাঁচানাের আপ্রাণ চেষ্টা করছে।

প্রতিকি ছবি (File Photo: iStock)

রবিবারের ছুটির দিনের সকাল। একটি স্থানে সারি সারি চেয়ার পাতা। জায়গায়টি স্থানীয় এক বিজেপি নেতার বাড়ি সংলগ্ন মাঠ। হাথরাসের নির্যাতিতার বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। সেখানে দু’জন-একজন করে জড়াে হচ্ছেন। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মহা-পঞ্চায়েত বসবে সেখানে। 

এ পর্যন্ত পড়ে যারা ভাবছেন, জাতপাতের ভেদ মিটিয়ে একটি গণধর্ষিতা নিহত দলিত মেয়ের জন্য সবাই একজোট হচ্ছেন। তাহলে তার চেয়ে বড় ভুল আর কিছু হবে না। এই পঞ্চায়েতের আসল উদ্দেশ্য ছিল, উচ্চবর্ণের চার ব্যক্তি, যাদের ফাঁসানাে হয়েছে তাদের বাঁচানাে। 

Advertisement

অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্যি। উত্তরপ্রদেশের ঠাকুর সমাজ এখন ভিতরে ভিতরে একজোট হয়ে অভিযুক্তদের বাঁচানাের আপ্রাণ চেষ্টা করছে। তার দুটি প্রমাণ হল শুক্রবারের নিভৃত বৈঠক এবং রবিবারের মহা-পঞ্চায়েত। 

Advertisement

শুক্রবার রাতে স্থানীয় বিজেপি নেতা রাজবীর সিং পেহলওয়ানের বাড়িতে একটি গােপন বৈঠক হয়। সেখানে কিছু উচ্চবর্ণের প্রতিনিধি হাজির ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্তের পবিবারের সদস্যরাও। কীভাবে উঁচু জাতের অভিযুক্তদের বাঁচানাে যাবে তা নিয়ে আলােচনা হয় ওই বৈঠকে। সেখানে একথাও আলােচনা হয়, পুরাে ঘটনাটাই সাজানাে। তা যদি প্রমাণ করা যায়। সেক্ষেত্রে দেখাতে হবে নির্যাতিতার পরিবার প্রথম থেকেই মিথ্যে বলছে। নিচু জাত মিথ্যে বলছে, এপ্রমাণ করা আর এমন কী? এমন অভিমতও শােনা গিয়েছে সেখানে। 

যদিও গুপ্ত এই বৈঠকের কথা স্বীকার করছেন না রাজবীর। তাঁর বক্তব্য ব্যক্তিগতভাবে তিনি বিষয়টির ওপর নজর রাখছেন ঠিকই, তবে তা নিয়ে কোনও বৈঠক করেননি। কিন্তু স্থানীয় সূত্রে খবর, বৈঠকে উপস্থিত একজন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা পুলিশকে বৈঠকের সব জানিয়েছি। নির্যাতিতার পরিবারের বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়া উচিত। অভিযুক্তদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানাে হয়েছে। পুলিশও এমন কোনও বৈঠকের কথা অস্বীকার করেছে। 

হাথরসের জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট প্রেমপ্রকাশ মিনা জানিয়েছেন, এমন কোনও বৈঠকের কথা তাদের জানা নেই। নির্যাতিতার পরিবারকে ভয় দেখানাের অভিযােগ উঠেছে অভিযুক্তদের পরিবার-পরিজন। এবং উচ্চবর্ণের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। সে অভিযােগ উড়িয়ে দিয়ে প্রেমপ্রকাশ বলেছেন, মৃতার পরিবারের ওপর কোনও চাপ নেই। রাজনৈতিক নেতারও সর্বোচ্চ ৫ জন তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা করতে পারেন। কিন্তু মজার কথা হল, শনিবারের আগে পর্যন্ত না সংবাদমাধ্যম, না রাজনৈতিক নেতা কেউই ঢুকতে পারেননি গ্রামে বা নির্যাতিতার বাড়িতে। 

Advertisement