প্রণব মুখােপাধ্যায়ের রাজনৈতিক প্রতিভা সবাই স্বীকার করতেন। তিনি ছিলেন সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র। একবার সবাইকে চমকে দিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমােহন সিং জানিয়েছিলেন, ‘২০০৪-এ সােনিয়া গান্ধি তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই পদের জন্য সবচেয়ে বেশি যােগ্য ছিলেন প্রণব মুখােপাধ্যায়।’
দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখােপাধ্যায়ের লেখা ‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ার্স ১৯৯৬-২০১২’ গ্রন্থের প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছিলেন মনমােহন সিং। এ প্রসঙ্গে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমি ঘটনাক্রমে রাজনীতিতে এসেছি। আর প্রণববাবু এসেছেন নিজের ইচ্ছায়। ২০০৪-এ সােনিয়াজি যখন আমাকে প্রধানমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন, তখন আমি জানতাম প্রণবজি আমার থেকে বেশি যােগ্য। কিন্তু আমার এবিষয়ে অন্য কোনও বিকল্প ছিল না। যদি প্রণব মুখােপাধ্যায় ভাবেন, তাঁরই প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত ছিল, তাহলে এ ভাবনায় তাঁর কোনও ভুল ছিল না।’ এই মন্তব্য আর কারও নয়, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমােহন সিংয়ের।
Advertisement
মনমােহন সিং এই মন্তব্য নাও করতে পারতেন কিন্তু প্রণব মুখােপাধ্যায়ের অগাদ পাণ্ডিত্য দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা, সেই সঙ্গে পাঁচ দশক ধরে তাঁর রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে থাকা সর্বোপরি বিভিন্ন ক্রাইসিসে তাঁর যে ভূমিকা সেকথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে এই স্বীকারােক্তি করেছেন মনমােহন সিং।
Advertisement
উল্লেখ্য, ২০০৪-এ যখন কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার গঠন হয়েছিল, তখন কংগ্রেসের সবচেয়ে প্রবীণ ও অভিভজ্ঞ নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার ছিলেন প্রণব মুখােপাধ্যায়। কিন্তু রাজীব গান্ধির সময় থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সােনিয়া গান্ধি মনমােহন সিংয়ের ওপর আস্থা রাখাটাকে বেশি নিরাপদ বলে হয়তাে মনে করেছিলেন কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে।
প্রণব মুখােপাধ্যায়ের সঙ্গে সােনিয়া গান্ধির এই রাজনৈতিক সম্পর্কের ওঠা-পড়া আর কারও অজানা নয়। প্রধানমন্ত্রী হতে না পারলেও দেশের প্রথম নাগরিক হওয়ার সম্মানটুকু কিন্তু পেয়েছিলেন প্রণববাবু। এক্ষেত্রে তিনি ছিলেন দেশের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি।
Advertisement



