দূষিত দিল্লিতে শ্বাস নেওয়া মানেই দৈনিক ২৫ থেকে ৩০টি সিগারেট খাওয়ার সমান। এই যুক্তিতে এয়ার পিউরিফায়ারের উপর জিএসটি কমানোর দাবি তুলে দিল্লি হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করল কেন্দ্র সরকার। শুধু আপত্তিই নয়, আবেদনকারীর উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্র।
এয়ার পিউরিফায়ারের উপর জিএসটি কমানো এবং সেটিকে মেডিক্যাল ডিভাইস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন আইনজীবী কপিল মদন। তাঁর যুক্তি ছিল, ভয়াবহ বায়ুদূষণের কারণে দিল্লিবাসীর স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে এয়ার পিউরিফায়ার বিলাসপণ্য নয়, বরং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য-সহায়ক সামগ্রী।
Advertisement
এই আবেদনের প্রেক্ষিতে দিল্লি হাই কোর্ট জিএসটি কাউন্সিলকে নির্দেশ দেয়, বিষয়টি নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করতে হবে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। তবে আদালতের এই নির্দেশের দু’দিনের মধ্যেই কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট হয়ে যায়।
Advertisement
কেন্দ্রের পক্ষে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এন ভেঙ্কটরামন আদালতে জানান, মাত্র দু’দিনের মধ্যে এই ইস্যুতে কেন্দ্র বা জিএসটি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে বিস্তারিত জবাব দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি আদালতের কাছে সময় চান এবং বলেন, জিএসটি কাউন্সিল একটি স্বশাসিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাদের নিজস্ব নিয়ম ও প্রক্রিয়া রয়েছে। ইতিমধ্যেই সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে জিএসটি কাউন্সিলের কাছে কিছু সুপারিশ পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
কেন্দ্রের আপত্তি এখানেই থামেনি। আবেদনকারীর উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কেন্দ্রের আইনজীবী। তাঁর বক্তব্য, এয়ার পিউরিফায়ারকে মেডিক্যাল ডিভাইস হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানানো হলেও মামলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে পার্টি করা হয়নি। কোনও পণ্যকে মেডিক্যাল সামগ্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষমতা জিএসটি কাউন্সিলের নেই বলেও আদালতকে জানানো হয়।
কেন্দ্রের আরও অভিযোগ, এই জনস্বার্থ মামলার আড়ালে কোনও নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা ব্যবসায়িক স্বার্থকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। সেই কারণেই এই মামলাকে প্রকৃত অর্থে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে মানতে নারাজ কেন্দ্র।
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর দিল্লি হাই কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে এয়ার পিউরিফায়ারের উপর জিএসটি সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত লিখিত জবাব দাখিল করতে হবে।
দিল্লির ভয়াবহ বায়ুদূষণের প্রেক্ষিতে এই মামলা জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুললেও, কেন্দ্রের কড়া আপত্তির ফলে শেষ পর্যন্ত আদালত কোন পথে হাঁটে, এখন নজর সেদিকেই।
Advertisement



