দিল্লি, ২৪ ডিসেম্বর— পরিবেশের ভারসাম্যগত কারণে খুবই সংবেদনশীল আরাবল্লি পর্বতমালাকে ঘিরে বিতর্কের আবহে অবশেষে কড়া পদক্ষেপ নিল কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক। দিল্লি থেকে গুজরাত পর্যন্ত বিস্তৃত গোটা আরাবল্লি পর্বতমালায় নতুন করে কোনও খনি লিজ দেওয়ার উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। একই সঙ্গে, আরাবল্লির অতিরিক্ত কোন কোন অঞ্চল বা জোনে খনন সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন, তা চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ফরেস্ট্রি রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশনকে।
পরিবেশ মন্ত্রকের স্পষ্ট বক্তব্য, এই নিষেধাজ্ঞা আরাবল্লির পুরো ভূখণ্ডে সমানভাবে কার্যকর হবে। প্রাচীন এই ভূতাত্ত্বিক পর্বতমালার অখণ্ডতা রক্ষা করা এবং বেআইনি ও নিয়ন্ত্রণহীন খনন বন্ধ করাই এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গুজরাত থেকে জাতীয় রাজধানী অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত আরাবল্লিকে একটি ধারাবাহিক পরিবেশগত ও ভূতাত্ত্বিক গঠন হিসেবে সংরক্ষণ করতেই এই নির্দেশ।
Advertisement
এতেই শেষ নয়। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই যে সব এলাকা খনন নিষিদ্ধ বলে চিহ্নিত করেছে, তার বাইরেও আরও কোন কোন অঞ্চলে খনন বন্ধ রাখা জরুরি, তা নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট গবেষণা সংস্থাকে। এই চিহ্নিতকরণ হবে পরিবেশ, ভূতত্ত্ব এবং সামগ্রিক ভূ-গঠনের বিচার বিশ্লেষণের ভিত্তিতে।
Advertisement
পরিবেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, আরাবল্লি জুড়ে খনন সংক্রান্ত একটি বিস্তৃত ও বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি করার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে ওই সংস্থাকে। এই পরিকল্পনায় গোটা অঞ্চলে খননের সামগ্রিক পরিবেশগত প্রভাব, বাস্তুতন্ত্রের বহনক্ষমতা, পরিবেশগত ভাবে সংবেদনশীল ও সংরক্ষণ-অত্যাবশ্যক এলাকাগুলির চিহ্নিতকরণ, পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসনের রূপরেখা থাকবে। সামগ্রিক পরিকল্পনাটি জনসমক্ষে তুলে ধরে বিভিন্ন পক্ষের মতামতও নেওয়া হবে।
কেন্দ্রের দাবি, এই উদ্যোগের ফলে আরাবল্লির আরও বিস্তৃত অংশ খনন থেকে সুরক্ষিত থাকবে। স্থানীয় ভূপ্রকৃতি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
তবে যে সব খনি ইতিমধ্যেই চালু রয়েছে, সেগুলির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে এবং সব পরিবেশগত শর্ত কঠোরভাবে পালন করে খনন চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত কড়াকড়িও জারি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
Advertisement



