এসআইআর–এর মূল লক্ষ্য হল ভোটার তালিকাকে ত্রুটিমুক্ত করা। কোনওভাবেই যেন তাতে মৃত, স্থানান্তরিত, ভুয়ো ও অনুপস্থিত ভোটারের নাম না থাকে তা নিশ্চিত করাই হল এর উদ্দেশ্য। এসআইআর প্রক্রিয়ায় যাতে কোনও ফাঁক না থাকে সেই জন্য ইতিমধ্যেই প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপের কাজের সময়সীমা ৪ ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে ১১ ডিসেম্বর করা হয়েছে। এই বাড়তি দিনগুলিকে কাজে লাগিয়ে বিএলও–রা যাতে আরও নিখুঁত এনুমারেশন ও ডিজিটাইজেশনের কাজ করে সেই নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়াল এদিন বিএলও–দের চিঠি লিখে জানিয়েছেন, এসআইআর-এর কাজের দায়িত্ব পুরোপুরি বিএলও-দের। ইচ্ছাকৃত ভুল ধরা পড়লে কমিশন আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। অন্যদিকে, ভুয়ো ভোটার ধরতে কমিশনের তরফে চালু করা হয়েছে এক নতুন সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যার নিমেষে ভুয়ো ভোটার ধরে ফেলবে। সফটওয়্যারটির নাম ‘ডেমোগ্রাফিক সিমিলার এনট্রিস’। বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়াল।
বিএলও–দের পাঠানো চিঠিতে এদিন ফের একবার এসআইআর–এর মূল লক্ষ্য আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছে কমিশন–– কোনও যোগ্য ভোটার যেন বাদ না পড়ে, কোনও অযোগ্য ভোটার যেন তালিকায় না ঢুকে যায়। এই কাজ ফের একবার বিএলওদের সুনিশ্চিত করতে বলেছে কমিশন।
মনোজকুমার জানান, কমিশনের কাজ আরও সহজ করতে নির্বাচন কমিশনের তরফে একটি নতুন সফটওয়্যার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই এই সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারছেন প্রত্যেকটি জেলার ইআরও-রা। প্রাথমিকভাবে তাঁরাই এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভুয়ো ভোটারের খোঁজ করবেন। কমিশনের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এদিন বিকেল ৪টে পর্যন্ত রাজ্যে ১ লক্ষ ২২ হাজার ৩০৩ জন ভুয়ো ভোটারের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। ফলে, ইআরও-রা এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে এত সংখ্যক ভুয়ো ভোটারের ট্রেস করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এই সফটওয়্যার কীভাবে কাজ করবে জিজ্ঞাসা করা হলে রাজ্যের সিইও জানান, নির্দিষ্ট এলাকার দায়িত্বে থাকা ইআরও খালি তাঁর এলাকার ভুয়ো ভোটারদের বিষয়টাই সফটওয়্যারে দেখতে পাবেন। আগামী দু”দিনের মধ্যে প্রত্যেক জেলার ডিইও–ও এই সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারবেন। গোটা জেলার ভুয়ো ভোটার ধরার অ্যাক্সেস ডিইও–দের কাছে থাকবে। পাশাপাশি, রাজ্যের সিইও-র কাছে পুরো রাজ্যের ও দেশের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের কাছে ভুয়ো ভোটার চেক করার অ্যাক্সেস থাকবে।
এদিন রাজ্যের সিইও দপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ম্যাপিং-এ রাজ্যের প্রায় ৫৩ লক্ষ (৫২ লক্ষ ৯৯ হাজার ৬৩৩ জন) ভোটারের হদিশ মেলেনি। অর্থাৎ তাঁরা আন–কালেক্টেবল ভোটার। তাঁদের মধ্যেই মৃত ২৩ লক্ষ ৪৮ হাজার ৯৫ জন, স্থানান্তরিত ১৮ লক্ষ ৫৫ হাজার ৩০২ জন, অনুপস্থিত ৯ লক্ষ ৪২ হাজার ১৬২ জন এবং অন্যান্য ৩১ হাজার ৮০১ জন, ডুপ্লিকেট ভোটার ১ লক্ষ ২২ হাজার ৩০৩ জন। সব মিলিয়ে, নির্বাচন কমিশনের এই নতুন সফটওয়্যার যে এসআইআর-এর কাজকে আরও সহজ করে তুলল, তা বলাইবাহুল্য।
Advertisement